মসজিদের সভাপতির বয়স এখনো চল্লিশ পার হয় নি। বৃদ্ধ হওয়ার আগেই যৌবনের উপকার ঘরে তুলছেন দু'হাত ভরে। তাঁর ঈর্ষণীয় কর্মযজ্ঞ দেখে বিস্মিত হই প্রায় সময়। তাঁর কড়া হুঁশিয়ারি ছিল এমন—ইমাম সাহেবের বেতন-বোনাস অবশ্যই এই দিনের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। সুসংগঠিত টিম মনিটরিং করে তাঁর হুকুম তামিল করা হয়েছে সুচারুরূপে।
এবার গ্রামের সেই মসজিদে সব মিলিয়ে চারজন হাফিজ তারাবীহ পড়িয়েছেন। রামাদানের আগেই কোনো এক শুক্রবারে সভাপতি সাহেব স্পষ্ট ভাষায় কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, অন্যান্য বছরের ন্যায় এবার তারাবীহ উপলক্ষে বাধ্যতামূলক কোনো কালেকশন করা যাবে না। এটা সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক। স্রেফ হাদিয়া কোটায় থাকবে বিষয়টি। মন চাইলে দেবে, মন না চাইলে দেবে না। তাঁর এই সিদ্ধান্তটা ছিল যুগান্তকারী। কারণ ইতোপূর্বে সেই মসজিদে তারাবীহর টাকার জন্য বাকবিতণ্ডা পর্যন্ত হত এবং ঈদের মাঠে বসে জোর করে তারাবীহর টাকা কালেকশন করা হত। কী এক বিশ্রী, শর'ঈ বিরোধী এবং ফেতনাময় ছিল ব্যাপারটা!
তাঁর টিমে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের কথাও একটাই—ইমামের জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করলে ইমাম আর ইমাম থাকেন কী করে? নেতাকে ভিক্ষুকদের কাতারে নিয়ে আসার এই সিলসিলা পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে। ইমাম তো ইমামই। মহল্লার নেতা। বুক চিতিয়ে চলবেন তিনি। সাহসে বলিয়ান হয়ে কথা বলবেন। নেতিয়ে যাবেন না কখনো। সেই নেতাই যদি অর্থের জন্য ছোট হয়ে যান তাহলে তাঁর পিছনে থাকা লোকগুলো কী পরিমাণ নীচু মানসিকতার হতে পারে?
এখনো বহাল থাকা কিছু কু-নীতি সম্পর্কে তরুণ সভাপতিকে জানানো হলে তিনি বললেন, "ওমরের (রা.) কিছুটা আমাদের নেতৃত্বে চলে আসলে এগুলো থাকবে না, ইনশাআল্লাহ। পরিবর্তন চাইলে উমরের পথে হাঁটতে হবে।"
কথাটা শুনে আনন্দে ভাইয়ের জন্য দুয়া করলাম।
আল্লাহ গো, এই তরুণকে উমরের মতো নেতা বানাও।
0 Comments