বদনজর লাগলে কি করনীয়?
নিজের এবং পরিবারের টুকটাক সমস্যার জন্য বদনজরের রুকইয়াহ করতে পারেন। খুবই সিম্পল রুকইয়াহ এটা। ইংশাআল্লাহ কোনো সমস্যা হবে না। এমন না যে, আপনার বদনজর লাগেনি কিন্তু রুকইয়াহ করেছেন আর ক্ষতি হবে। কুরআনুল কারীম মেনে রুকইয়াহ করলে কারও ক্ষতি হয় না।
১। কেউ আপনাকে একটা ভাল কথা বললো। এরপর থেকেই আপনার শরীর খারাপ বা যে বিষয়টা নিয়ে বলেছে সেই কাজটা আর করতে পারছেন না। তাহলে যে বলেছে তাকে বলেন, অযু করতে। এবার এই অযুর পানিটা নিজের গায়ে ঢালেন। ব্যস, রুকইয়াহ হয়ে গেল। এক গোসলেই ইংশাআল্লাহ আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন।
যে বলেছে তার কাছ থেকে অযুর পানি নিতে পারবেন না? না পারলেও অসুবিধা নেই। তাকে বাসায় দাওয়াত দেন। এরপর হাত ধোয়ার জন্য পানি দিন, একটা বাটি দিন। এরপর সেই পানিটা নিজের গায়ে ঢালবেন।
একইভাবে যদি আপনি নিজে কোনো কথা বলার পর অসুস্থতা অনুভব করেন তাহলে নিজের অযুর পানি নিজের গায়ে ঢালুন।
বাবা-মার নজর সন্তানের লাগে না- এই টাইপের কথার কোন ভিত্তি চোখে পড়েনি। বরং কোনো বাচ্চা হুট করে অসুস্থ হলে পরিবারে সবার অযুর পানি নিয়ে আগে তার গায়ে ঢালা উচিত।
২। প্রথমটা ফলো করার পর উন্নতি না হলে এই দুআগুলো বার বার পড়ে পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিকে ফু দিন সরাসরি গায়ে। অথবা তার মাথায় হাত রেখে পড়ুন। বার বার করুন। পড়ে পানিতে ফু দিয়ে খাইয়ে দিন। পড়ে গোসলের পানিতে ফু দিয়ে গোসল করান।
🛑 أُعِيْذُكُمْ بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ ، مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لَامَّةٍ.
🛑 بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللَّهُ يَشْفِيكَ، بِسْمِ اللَّهِ أَرْقِيكَ.
🛑 بِاسْمِ اللَّهِ يُبْرِيكَ، وَمِنْ كُلِّ دَاءٍ يَشْفِيكَ، وَمِنْ شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ، وَشَرِّ كُلِّ ذِي عَيْنٍ.
🛑
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبْ الْبَاسَ، اشْفِ وَأَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا
এই নিয়মটা বাচ্চা-বুড়ো সবার জন্য।
মেয়েদের হায়েজ, নেফাসের সময়ও করা যাবে এটা।
যে অসুস্থ সে নিজেই করতে পারলে সবচে' ভাল।
দুআ' গুলোর উচ্চারন জানার জন্য লিংক দিলাম কমেন্টে।
৩। এবার যেটা বলবো তাকে আমরা বদনজরের সেলফ রুকইয়াহ বলি। কেউ যদি আপনাকে বলে বদনজরের জন্য সেলফ রুকইয়াহ করেন তাহলে এই পদ্ধতি ফলো করবেন। কেউ না বললেও করতে পারবেন। কার/কিভাবে নজর লাগলো জানেন না , অনেক পুরনো সমস্যা, কোনো ভাবেই অযুর পানি নেয়া সম্ভব না - এই টাইপের ঘটনা হলে সেলফ রুকইয়াহ করবেন।
এই পদ্ধতিতে ২ টি কাজ করতে হবেঃ
তেলাওয়াত করা অথবা অডিও শোনা
গোসল করা
মনে রাখতে হবে তেলাওয়াত করা সর্বোত্তম
কি কি তেলাওয়াত করতে হবে?
এই আয়াতগুলো। লিস্ট পাবেন লিংকে
https://www.facebook.com/groups/ruqyahbd/posts/1211775139009803
আর পিডিএফ চাইলে এই লিংকে পাবেন। (৫ নং)
https://www.ruqyahbd.org/ayat
লিস্টের সাথে পিডিএফের আয়াত সংখ্যা কম বেশি হতে পারে। এটা নিয়ে টেনশনের কিছু নেই। আপনার যেটা ভাল লাগে পড়েন।
যারা অডিও শুনতে চান তারা এই লিংক থেকে ১ নং অডিও শুনবেন। মাঝে মাঝে ২ নং ও শুনবেন।
https://www.ruqyahbd.org/download
সারাদিনে কমপক্ষে একবার অডিও শুনবেন, মন দিয়ে। অন্য কাজে ব্যস্ত থেকে না।
গোসল করার জন্য এক বালতি পানি নিন। পানিতে দুই হাত যতটুকু ডুবে ডুবিয়ে দিন। এরপর ৭ বার দরূদ শরীর, ৭ বার সুরা ফাতিহা, ৭ বার আয়াতুল কুরসি, ৭ বার সুরা ইখলাস, ৭ বার সুরা ফালাক, ৭ বার সুরা নাস, ৭ বার দরূদ শরীফ পড়বেন। ফু দেয়া লাগবে না। শীত লাগলে গরম পানি ব্যবহার করুন। এরপর এই পানি নিয়ে গোসলখানায় গিয়ে গায়ে ঢালুন। এবার ইচ্ছামত গোসল করুন।
পানি মন দিয়ে পড়বেন। দুই হাতই ডুবাবেন। ইমার্জেন্সি ছাড়া কথা বলবেন না।
এই পানি টয়লেটে পড়লে (গোসলের সময় পানি ঢাললে পড়তেই পারে) কোনো গুনাহ হবে না।
যতবার বলা হল ততবারই পড়বেন। প্রথম দিকে একটু সময় লাগলেও পরে কমে আসবে।
সংক্ষিপ্ত কোনো দরূদ পড়লেও হবে। সালাতেরটাই পড়তে হবে এমন না।
তাহলে এই তিন পদ্ধতির যেটা আপনার জন্য প্রযোজ্য ফলো করুন। খুটিয়ে খুটিয়ে কোনো প্রশ্ন না করে সহজভাবে চিন্তা করে অনুসরণ করুন।
পিরিয়ডের সময় সেলফ রুকইয়াহ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে অডীও শুনবেন। গোসলের পানি অন্য কেউ তৈরি করে দিবে। অন্য কেউ না থাকলে ২ নং এ বলা দুয়াগুলো পড়ে পানিতে ফু দিয়ে গোসল করতে পারবেন।
৭ থেকে ১০ দিন করার পর গ্রুপে আপডেট জানাতে পারেন পোস্ট করে। উপরে লিখে দিবেন "আপডেট পোস্ট" । এটা লিখলে আগে এপ্রুভ হবার চান্স আছে।
যদি পশু-পাখি, ফসল, গাছপালা, বসতবাড়ি ইত্যাদির উপর কারও বদনজর লাগে তাহলে তার অযুর পানি নিয়ে খেতে দিন/ছিটিয়ে দিন। সম্ভব না হলে ২ এ বলা দুআ' গুলো পড়ে পানিতে ফু দিয়ে তা খেতে দিন/ছিটিয়ে দিন।
আল্লাহ তায়ালা এমন সুস্থতা দিন যার পরে আর কোনো অসুস্থতা বাকি না থাকে। আমীন।
0 Comments