"হারাম"

আজকে আমাদের মসজিদে একজন লোক (৪৫) এসেছেন রাত্রী জাগরণের জন্য। আমাদের মহল্লার'ই লোক। আমার বয়সে এই প্রথম তাকে মসজিদে দেখলাম। 

তো ঘটনাটি বলছি.. আজকে খতম তারাবী শেষ হলো। এই উপলক্ষে সবাইকে মিষ্টি খাওয়ানোর দায়িত্ব আমার উপর। সবাইকে মিষ্টি দিচ্ছি হঠাৎ দেখি সে। তাকেও মিষ্টি দেওয়ায় সে কোনো রকম কষ্ট করে উত্তর দিচ্ছে 'আমার তো খাওন যাইবো না'।

পরে হঠাৎ করে তার কাহিনি মনে পড়লো। তার ক্যান্সার ধরা পড়েছে। কারসিনোমা গল ব্লাডার (পিত্তথলি)। কয়েকদিন আগে তার অপারেশন হয়েছে। শুনেছি অপারেশনের সময় নাকি কয়েক মগ শুধু ভিতর থেকে পুজ'ই বের হয়েছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত সম্পুর্ন অঙ্গটি কেটে ফেলা গিয়েছে বলে কিছুটা রক্ষা। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিয়ম মেনে কোনো রকম কিছু খেতে পারবেন৷ কিছুটা হাটাচলা করতে পারবেন। এরই মধ্যে শরীর হাড্ডিসার হয়ে গিয়েছে। এখনি জীবন্ত কঙ্কালে পরিনত হয়েছে।

এখন প্রশ্ন জাগতেই পারে, আমি জীবনে প্রথম তাকে মসজিদে দেখলাম! এতদিন কি করেছেন উনি। আল্লাহ মাফ করুন। তিনি অত্র অঞ্চলের সবচেয়ে বড় গাঁজার সাপ্লায়ার। কোটি টাকা ইনকাম করেছেন শুধু এগুলা করেই। সহায়-সম্পত্তি, যায়গা জমির কোনোই অভাব নেই। মাদকের ব্যবসা তাদের পারিবারিক। আরো অনেক কিছু যা বলতে চাচ্ছি না।

এ থেকে আমাদের শিক্ষা কি তাহলে। হারাম পন্থায় অর্থ উপার্জন করে প্রচুর টাকা পয়সার মালিক হওয়া যায়। কিন্তু ভালো থাকা কি আদৌও যায়। লোকটির প্রতি থেরাপিতে অর্ধ লক্ষ করে টাকা যাচ্ছে। তো এত জীবন হারাম পন্থায় যা ইনকাম করেছেন তা যাইতে কত্তক্ষন লাগবে। আর তার অসহনীয় যন্ত্রণার কথা আর নাই বা বললাম। হায়! এই দুনিয়া কয়দিনের। মানুষ কেনো বুঝে-না। 

- সুমন আহমাদ



Post a Comment

0 Comments