৬) আমেরিকান প্রফেশনাল বক্সার রামোন সসার বয়স তখন চল্লিশ। পেশাদার বক্সিং থেকে অবসর নিয়েছেন। বলতে গেলে একরকম একাই থাকেন, আগের সংসার টেকেনি।
একদিন হিউসটনের এক ক্লাবে গিয়ে ভালো লেগে যায় মারিয়া লুলু নামের এক নারীকে। রামোনের ভাষায়, মারিয়া ছিলো সত্যিই সুন্দরী, একবার দেখেই ভালো লেগে গিয়েছিল। তবে মারিয়া বেশ অসহায়। মেক্সিকো থেকে এসেছে ভিজিট ভিসায়, সাথে তার এক ছেলে ও এক মেয়ে।
কিছুদিন পর তারা বিয়ে করে নেন। রামোনের একটা জিম ছিলো এবং তিনি রিংয়ে বক্সিংয়ের আয়োজন করতেন। দুটো মিলে তাদের সংসার ভালোই চলছিল। রামোন মারিয়ার ছেলেমেয়েদের বাবা হবার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন।
তিন বছর পর। মারিয়া আমেরিকান নাগরিকত্ব পায়। ঠিক পরেরদিন থেকেই তার ব্যবহার সম্পূর্ণ বদলে গেলো। রামোনকে বিন্দুমাত্র সম্মান করে না, উঠতে বসতে কথা শোনায়। "তোমাকে আমার আর দরকার নেই" , "আমি তোমার মতই একজন আমেরিকান নাগরিক" , "তোমার সাথে থাকতে চাই না"।
রামোনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। এই মাঝবয়সে এসব দেখতে হচ্ছে! মারিয়াকে বলতে গেলে রাস্তা থেকে তুলে এনেছেন। তাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছেন, বাপ না হয়েও তার দুই সন্তানকে সবকিছু দিতে চেষ্টা করেছেন।
পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে থাকলো। মারিয়া ডিভোর্স চায়। ফাইলও করে ফেললো। ফাইনালাইজ হবার পথে।
এরমধ্যে ঘটে গেলো আসল ঘটনা। রামোনের জিমে আসতো মুনদো নামে এক ছেলে। তার রামোন-মারিয়া দুজনের সাথেই ভালো সম্পর্ক ছিল। একদিন সন্ধ্যেবেলা জিমে ওয়ার্কআউট করার সময় সে শুনতে পায়, মারিয়া তার মেয়েকে বলছে, সে একটা হিটম্যান ভাড়া করবে। যেহেতু ডিভোর্স এখনো ফাইনালাইজ হয়নি, রামোনকে মারতে পারলে স্পাউস হিসেবে সে জিমটা-সহ রামোনের সমস্ত সম্পত্ত্বি পাবে।
মুনদো সাথে সাথে রামোনকে জানালো। রামোন অবাক হলেও দুজন মিলে গেলো পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশ বলল, তারা কিছুই করতে পারবে না, প্রমাণ কোথায়? প্রমাণ জোগাড় করতে পারলে পুলিশ এগোতে পারে।
তারা চলে আসলো। রামোন বলেন, "ওই কয়দিন কিভাবে কেটেছে বোঝাতে পারব না। আমি বালিশের নিচে গান রাখতাম, গাড়িতে গান রাখতাম।"
এবার দুজন মিলে একটা প্লান করলো। সে অনুযায়ি মুনদো মারিয়ার কাছে বলল, তোমার কি হিটম্যান লাগবে? আমি এরকম একজনকে চিনি। মারিয়া বললো, হ্যাঁ লাগবে তো। সে বরং কিছু অগ্রিম টাকাও দিতে চাইলো। মুনদো সব রেকর্ড করলো।
ফাইনালি তাদের কাছে প্রমাণ আছে, পুলিশের কাছে গেল। পুলিশ অফিসার এবার এক অদ্ভুত প্লান বানালেন। রামোনকে নিয়ে গেলেন কয়েক কিলোমিটার দুরে এক ফাঁকা মাঠে। একটা গর্ত খুড়লেন। মেকআপ আর্টিস্ট দিয়ে রামোনকে এমনভাবে সাজানো হলো যেন গুলি খাওয়া লাশের মত লাগে। তারপর ছবি তুলে একজন অফিসার গেলো মারিয়ার কাছে। নিজেকে সেই হিটম্যান পরিচয় দিয়ে বলল, কাজ হয়ে গেছে। ছবি দেখালে মারিয়া বিশ্বাস করলো।
"সে হাসছিল" অফিসার বলেন, তার স্বামী মারা গেছে আর সে হাসছিল। অফিসারকে ইভেন তিন হাজার ডলারও দিলো পারিশ্রমিক হিসেবে।
পুলিশ এবার হাতেনাতে ধরল। বিচার বসলো। মারিয়া সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারে অভিযুক্ত হলো। এবং বিচারে মারিয়ার ২০ বছরের জেল হয়। সে এখনো জেলেই আছে।
নিজের সাথে ঘটা এই অবিশ্বাস্য ঘটনা নিয়ে রামোন লেখেন তার বিখ্যাত বই - I Walked on My Own Grave
৭)
২০২০ সালের ঘটনা। একদিন রাতে আমার এক বন্ধু (ধরা যাক তার নাম - ওমর) আমাকে ফোন করলো। আমার আরেক বন্ধু ছিলো ডাক্তার, তার সাথে কথা বলতে চায়। আমি ইমারজেন্সি দেখে কথা বলিয়ে দিলাম।
পরে বললাম, কী হয়েছে? ওমর বলল, ওর এক বন্ধু নতুন বিয়ে করেছে। নতুন বিয়েতে যা হয়, স্ত্রীর ব্লিডিং হয়ে একেবারে মারাত্মক অবস্থা। লজ্জ্বায় বাসার কাউকে বলতে পারেনি, ডাক্তারের কাছেও নেওয়ার মত অবস্থা নেই। তাই বন্ধুদের মধ্য থেকে যদি সমাধান করা যায় এজন্য আমাকে ফোন করেছিল।
কয়েকদিন পর ওমরকে জিজ্ঞেস করলাম, "তোর বন্ধু তো খুবই লাকি, এই দুঃসময়েও ভার্জিন বউ। সে বন্ধুর কী অবস্থা? তার ওয়াইফ কী সুস্থ হয়েছিল?"
উত্তরে ও যা বলল তাতে আমার হাত-পা পুরো ঠান্ডা হয়ে গেল। বলল, "তুই অনেক ইনোসেন্ট চিন্তা করছিস। কিসের ওয়াইফ, ওই মেয়ে তো ওর গার্লফ্রেন্ড। নতুন বিয়ে হয়েছে, স্বামীকে বলেছে কিছুদিন দেরী করতে। বাপের বাড়ি বেড়াতে এসে বয়ফ্রেন্ডকে বলেছে তার ভার্জিনিটি কেবল তাকেই গিফট করতে চায়।"
এরপর সব বুঝতে পারলাম- সেই লুকোনোর কারণ, বন্ধুদের মধ্যে ডাক্তার খোঁজা।
এটা গল্প সিরিজ, তবু কিছু কথা বলতে হবে।
চার্লস ডিকেন্স বলেছেন, A man is lucky if he is the first love of a woman...আইরিশ কবি অস্কার ওয়াইল্ডও একই রকম কথা বলেছেন Men always want to be a woman's first love - women like to be a man's last romance."। আপনি তার ফার্স্ট লাভ না হলে কপালে দুঃখ আছে, সব দিয়েও সব কোনোদিন পাবেন না।
আমার কালেকশনে বহু স্ক্রিনশট আছে, যেখানে মেয়েরা স্বামী-সন্তান সব পাবার পরেও সেই প্রথম প্রেমিককে কোনোভাবেই ভুলতে পারেনি। কিন্তু একজন তৃতীয় পুরুষ সেই ভার কেন বয়ে বেড়াবে? এটা অন্যায় নয়?
নারীর অতীত কেন ভয়ংকরভাবে ম্যাটার করে? এই ফার্স্ট লাভের কারণে, যা তারা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মনে রাখবে।
টাইটানিক সিনেমার কথা ধরা যাক। সব বাদ দিয়ে একদম প্রথমদিকে কী আছে?
এক মহিলা এক জাহাজযাত্রায় তার হবু স্বামীকে রেখে র্যান্ডম এক ছেলের সাথে ব্যাভিচার করেছে তার স্মৃতিচারণ। সেটা এরকরম গেলো। কিন্তু মুল সমস্যাটা এর পরে। এরপর রোজের বিয়ে হয়েছে, সন্তান-নাতি-নাত্নিও আছে। অথচ সে ঐ ছেলেকে সারাজীবনে ভুলতে পারেনি। তার মানে কী? সে এতগুলো বছর ধরে তার বর্তমান স্বামীকে ঠকিয়েছে।
একই কথা বলা যায় প্রখ্যাত বাংলা সাহিত্যিক মৈত্রেয়ী দেবীর ক্ষেত্রে। তিনি ন হন্যতে লিখেছেন বৃদ্ধা বয়েসে, কিন্তু মির্চার সাথে সেই কিশোরী বয়সের রোমান্স এত ডিটেইলস দিয়ে লিখেছেন, মির্চা ছিলো তার ফার্স্ট লাভ। তার বৈধ স্বামী মনোমোহন সেন পেয়েছেন কেবল কয়েক দশকের অ্যাক্টিং পারফরমেন্স।
এই লেখাটা (৭ নম্বর গল্প) লিখবো, এমন সময় কাকতালীয়ভাবে ওমর জানালো শহরে ফিরছে। ভাবলাম ও আসুক, তারপর ওর সেই ব্যাভিচারি বন্ধুর আপডেট জেনে এখানে যোগ করে দেবো।
৪ বছর পর, এই ফেব্রুয়ারির প্রথমদিকে ওকে জিজ্ঞেস করলাম ওই ব্যাপারে। বলল, ওসব এখনো চলছে। ছেলেটা বায়িং হাউজে চাকরি করে, বিয়ে করেনি- অবশ্য করবেই বা কেন। মেয়েটার স্বামী অফিসে গেলে একদম তার বাসায় গিয়ে সেক্স করে আসছে। তার হতভাগ্য হাজব্যান্ড এই চার বছরেও কিছু টের পায়নি।

0 Comments