বাংলাদেশে এপার্টমেন্ট কেনা একটা জঘন্য রকমের ইনভেস্টমেন্ট

 


#বাংলাদেশে এপার্টমেন্ট কেনা একটা জঘন্য রকমের #ইনভেস্টমেন্ট।

এটার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বাংলাদেশে এসেটের দামের তুলনায় ভাড়া হাস্যকর রকমের কম!

ছোট একটা উদাহরণ দেই। ধরেন আপনি #উত্তরায় ২০০০ স্কয়ার ফিটের একটা এপার্টমেন্ট কিনলেন, দাম নিল দুই কোটি টাকা। এই বাসার ভাড়া হবে বড়জোড় চল্লিশ হাজার টাকা।

ধরে নিলাম একজন এই বাসাটা কিনে নিজেই থাকা শুরু করলো। আমরা তার অপোরচুনিটি কস্ট ক্যালকুলেট করবো। #হিসাবের #সুবিধার্থে আমি ইনফ্লেশন ক্যালকুলেট করবো না, এটা উভয় পক্ষের হিসাব থেকেই বাদ যাবে। ব্যালেন্স করার জন্য ইন্টারেস্ট রেইটও সরল সুদে হিসাব করবো, #চক্রবৃদ্ধি না।


#এপার্টমেন্টটা যদি সে না কিনতো, চল্লিশ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সে এই বাসাতেই এক বছরে মাত্র চার লাখ আশি হাজার টাকা দিয়ে থাকতে পারবে। মানে দশ বছর থাকতে পারবে আটচল্লিশ লাখ টাকায়। চল্লিশ বছর থাকতে পারবে এক কোটি বিরানব্বই লাখ টাকায়!


সবচেয়ে বড় #ব্যাপার হল, তাকে এককালীন যে দুই কোটি #টাকা ইনভেস্ট করতে হত সেটা করতেই হল না। তার সঞ্চয় খরচ হল না, তার #চিকিৎসার সিকিউরিটি থাকলো, তাকে তার সারা জীবনের সব সঞ্চয় এক জায়গায় বিনিয়োগের ঝুকি নিতে হল না, তাকে ঋণের দায় নিতে হল না। এই দুই কোটি টাকা সে অন্য যে কোন জায়গায় ইনভেস্ট করে চল্লিশ বছরে আরও অনেক টাকা বানাতে পারে।

ধরলাম সে ইনভেস্ট করবে না, সে সবচেয়ে বাজে উপায়ে টাকাটা ব্যবহার করবে। অর্থাৎ সে শুধু #ব্যাংকে টাকাটা রেখে দিবে। ধরলাম ব্যাংক তাকে ৬% হারে সুদ দিবে। তাহলে দুই কোটি টাকায় বছরে সে পাবে ১২ লাখ টাকা। অর্থাৎ মাসে এক লাখ। চল্লিশ হাজার টাকা ভাড়া দিয়েও হাতে আরও ষাট হাজার থাকে। চল্লিশ বছরে সংখ্যাটা চার কোটি আশি লাখ টাকা শুধু ইন্টারেস্টেই, সেটাও সরল সুদে! চক্রবৃদ্ধিতে হিসেব করলে সেটা ইনফ্লেশন রেইটকে বিট করলেও করতে পারে। সঞ্চয়পত্রে ইনভেস্ট করলে সংখ্যাটা আরও অনেক #বেশি।


আর এই চল্লিশ বছরে আপনার কেনা #ফ্ল্যাট এর চেহারার অবস্থা কি দাঁড়াবে বলেন তো? ফ্ল্যাট তো জমি না, এর ডেপ্রিসিয়েশন আছে। এখনকার বাজারে চল্লিশ বছরের পুরনো একটা ফ্ল্যাট বিক্রি করতে যান, বুঝবেন। ক্রেতা পান কিনা সন্দেহ! এপার্টমেন্ট কালচার এদেশে খুব পুরনো না। চল্লিশ বছর পর পুরনো #বাড়িগুলোর ভবিষ্যত নিয়ে কেউ ভেবেছেন কি? ২০৬০/৭০ সালে ঢাকা শহর হবে পুরনো বিল্ডিংয়ের কারখানা। একসময় সেগুলো ভাংতেই হবে, এবং তখন বিল্ডিংয়ের সব ফ্ল্যাট #মালিক একমত না হলে নতুন বাড়িও বানাতে পারবেন না, অচল-সেকেলে ফ্ল্যাটে বাধ্য হয়ে থাকতে হবে। নতুন বিল্ডিং বানাতে পারলেও আবারও একগাদা খরচ! নিজের ফ্ল্যাটে প্রতিবেশিরা ভাল না হলে ইউ উইল বি স্টাকড, আজীবন টক্সিক একটা পরিবেশে থাকতে হবে। ভাড়া বাসায় পুরো চল্লিশ বছরই নতুন ফ্ল্যাটে থাকতে পারবেন, সুবিধা অনুযায়ী এলাকায় শিফট করতে পারবেন, পরিবেশ ভাল না লাগলে বদলে ফেলতে পারবেন, #সবচেয়ে বড় ব্যাপার বিপদের সময় আপনার হাতে লিকুইডিটি থাকবে!


অনেকে আবার #লোন করে ফ্ল্যাট কিনে। বিশ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে যে ফ্ল্যাটে থাকা যায়, সেই ফ্ল্যাটে ডাউন পেমেন্টের টাকা পকেট থেকে দিয়ে তিরিশ হাজার টাকা প্রতি মাসে কিস্তি দেয়। এসেট হয়ে যায় লায়াবিলিটি, প্রতি মাসে যার খরচ দশ #হাজার টাকা!


"নিজের বাড়ি" একটা বিংশ শতকের এলিটিস্ট আবেগ। একে প্রশ্রয় না দিয়ে স্মার্ট হোন!❤️

আমার আব্বু আমি কেউ ফ্ল্যাট কিনাটা পছন্দ করিনা,দরকার হলে নিজের সাথ্য অনুযায়ী ছোট একটা বাড়ি করবো নিজের মতো করে সাজাবো❤️


বড়জোড় একটা জমি কিনে রেখে ভাড়া থেকে জীবন কাটায় দেন! কিংবা ভাল এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম দিয়ে খারাপ এলাকায় #বাড়ি কিনেন, ফ্ল্যাট না।


(ডিসক্লেইমার: আমি অবশ্যই বলছি না যে টাকা নিয়ে ব্যাংকে ফেলে রাখা ভাল জিনিস। কারন ব্যাংক টাকা রেখে সুদ খাওয়া হারাম😔

এটা টাকার সবচেয়ে বাজে #ব্যবহার৷ উদাহরণ টানলাম এটা বোঝাতে যে টাকার সবচেয়ে বাজে ব্যবহারও ফ্ল্যাট কেনার চেয়ে ভালো) 

Post a Comment

0 Comments