"কোরিয়া যেভাবে নারীবাদ ঠেকাচ্ছে"

 


দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সউলে তখন মধ্যরাত। গলির রাস্তায় এক মাতাল তরুণী একটা ট্যাক্সির উপর লাফাচ্ছে। ট্যাক্সিটার সামনের কাঁচ ভেঙ্গে গেছে, বনেট পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে।
আর ট্যাক্সির মালিক রাস্তার পাশের ফুটপাতে বসে নিজের একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম ধ্বংস হতে দেখছে। আর প্রার্থনা করছে যেন মেয়েটা চলে যায়।
আচ্ছা, কিন্তু সে থামাতে যায় নি কেন? গিয়েছিলো তো। কিন্তু মেয়েটাকে নেমে যেতে বললে সে উত্তর দিল, যদি আমাকে থামানোর চেষ্টা করো, আমি তোমার নামে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের মামলা করবো।
ট্যাক্সির মালিক খুব ভালোভাবেই বুঝেছে মেয়েটা কী বলেছে। একবার ওতে অভিযুক্ত হলে কোরিয়াতে লাইফ পুরো জাহান্নাম হয়ে যাবে। জব পাবে না, ব্যবসা করতে পারবে না - ইভেন ঘর থেকে বেরোতেও পারবে না।
এটা তো মাত্র একটা ঘটনা ছিল। প্রায় কয়েক লাখ কোরিয়ান পুরুষ এরকম ঘটনার শিকার।
এর সাথে ছিলো ফেমিনিজমের বাকি ফলাফলগুলো- রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে পুরুষ বিদ্বেষ, পয়সা ও ক্ষমতার সবগুলো জায়গায় নারীদের অন্যায় সুযোগ দেওয়া, পরিবার ও জন্মহারের সর্বনাশ করা।
কোরিয়া ধনী দেশ, আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও সামরিক অঙ্গনে মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ। অথচ ২০২২ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা দেশে অর্থনীতি, উত্তর-কোরিয়া কিংবা পরমাণু অস্ত্র— সবকিছুকে ছাপিয়ে প্রধানতম ইস্যু হয়ে উঠেছিল নারীবাদ। এই সর্বনাশা মতবাদকে কোরিয়া থেকে দূর করার প্রতিজ্ঞা করে কিভাবে মাত্র তেরো মাস আগে রাজনীতিতে আসা একজন উকিল কোরিয়ার মত দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেন, কিভাবে কোরিয়ার প্রতি ৪ জন তরুণের তিন জন তাকেই ভোট দিল— সেই গল্প বলা হবে আজকে।
এই লেখার প্রথম ভাগে থাকবে কোরিয়াতে নারীবাদ কিভাবে পুরুষদের লাইফ বিষিয়ে তুলেছিলো সে ব্যাপারে আলোচনা। আর দ্বিতীয় অংশে থাকবে ২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর কোরিয়াতে যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে, কিভাবে ফেমিনিস্ট শব্দটি সেখানে গালিতে পরিণত হলো, আর সেখানকার নারীবাদ বিরোধী কার্যক্রমের সাথে পরিচয়।
শুরু করা যাক?
১। বাধ্যতামুলক মিলিটারী সার্ভিসঃ পুরুষের প্রতি সর্বোচ্চ বৈষম্য
কোরীয় যুদ্ধের পর কোরিয়ান পুরুষদের জন্য মিলিটারিতে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়। এর আওতায় প্রত্যেক কোরিয়ান পুরুষকে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে দুই বছরের জন্য আর্মিতে যোগ দিতে হবে। না দিলে জেল।
এটা চুড়ান্ত মাত্রার বৈষম্য। কারণ নারীদের জন্য এটা বাধ্যতামূলক নয়। কোরিয়ার শিক্ষা ও চাকুরির বাজার পৃথিবীর সবচেয়ে প্রতিযোগীতামুলক। এখানে একজন এভারেজ স্টুডেন্টকেও দিনে মিনিমাম ১৫ ঘন্টা পড়তে হয়। সেখানে নিজের প্রাইম বয়সে পড়াশোনা বা চাকরীর প্রস্তুতি থেকে সম্পূর্ণ দুই বছর কেড়ে নেওয়া - তাদের বহুগুণে পিছিয়ে দেয়। কোরিয়ান তরুণেরা তাদের সার্ভিস শেষ করে এসে দেখে তাদের সমবয়সী মেয়েরা অলরেডি চাকরীতে ঢুকে গেছে। এখন তাদের পুরোনো গ্যাপ পূরণ করতে হবে, তারসাথে আবার নতুন বাজারে আসা গ্রাজুয়েটদের সাথেও প্রতিযোগীতায় নামতে হবে।
এর আগে মিলিটারি থেকে আসলে চাকরীর বাজারে সরকারীভাবে কিছু এক্সট্রা সুবিধা দেওয়া হত। কিন্তু ফেমিনিস্ট আন্দোলনের ফলে সেই ১৯৯৯ সালেই তা বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। ফলে মিলিটারি মানে কোরিয়ান পুরুষদের এত গুরুত্বপূর্ন দুই বছর কেড়ে নেওয়া ছাড়া আর কিছুই না।
তার উপর মিলিটারিতে গিয়ে আহত হবার সম্ভাবনা অনেক। অনেকেই পরে এসে সিভিলিয়ান লাইফের সাথে অ্যাডজাস্ট করতে পারে না।
এবার আসে বিয়ের বাজার। বিয়েতে কোরিয়ান সমাজে আশা করা হয় হয় যে পাত্র নিজের টাকায় বাড়ী কিনবে, পাত্রী না। কোরিয়ার প্রথম শ্রেণির শহরগুলোতে একটা এভারেজ অ্যাপার্টমেন্টের দাম প্রায় ৫ কোটি টাকার মত, যা একজন এভারেজ স্যালারিম্যানের ১০ বছরের স্যালারির চেয়েও বেশী।
এই আর্টিকেল লেখার সময় গত ফেব্রুয়ারিতে কোরিয়াতে এক নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে। 'নিউ চয়েস পার্টি' নামের এই দলের ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে, তারা নারীদের জন্য মিলিটারি বাধ্যতামূলক করবে।
২. এক অভিশপ্ত মন্ত্রণালয়
২০০০ সালের দিকে কোরিয়াতে নারী ও লিংগসমতা মন্ত্রণালয় চালু করা হয়। এটি ছিলো তখন পর্যন্ত কোরিয়ান ফেমিনিস্টদের সর্বোচ্চ অর্জন। ২০২২ সালের নির্বাচনে এই একটা মন্ত্রণালয় প্রধান ইস্যু হয়ে ওঠে। কারণ রক্ষণশীল পিপিপি পার্টির প্রেসিডেন্ট ক্যান্ডিডেট ঘোষণা দেন যে, তিনি এই মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করবেন। তার এই ইশতেহার নিয়ে ফেমিনিস্টরা জাতিসংঘে পর্যন্ত অভিযোগ দিয়েছিলো।
দেখে আসা যাক এই মিনিস্ট্রির কিছু কার্যক্রম।
২০০৮ সাল পর্যন্ত কোরিয়াতে পরিবার নিবন্ধনের সময় পুরুষকে কর্তা হিসেবে বিবেচনা করা হত। এই মন্ত্রণালয় সেটা বন্ধ করে দেয়।
২০১৪ সালে কোরিয়াতে প্রথমবারের মত বাধ্যতামুলক নারী কোটা চালু করা হয়। এরা আওতায় সমস্ত স্থানীয় সরকার, পাবলিক স্কুল, সরকারী অফিসে কমপক্ষে ৩০% নারী কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়। মনে রাখা দরকার, বাকী ৭০%এও নারীরা সমান সুযোগ পাবে। তাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো সংসদে ৫০% সংরক্ষিত নারী আসন রাখা।
২০১৯ সালে এই মন্ত্রণালয় গর্ভপাত বৈধ ঘোষণা করে এবং ২০২১ সালে ডিক্রিমিনালাইজ করে। অর্থাৎ, যে কারণেই নারী অ্যাবর্শন করুক, তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না।
এটা একমাত্র মন্ত্রণালয় যাদের হাতে শাস্তি পাওয়া ভিক্টিমদের ১০০%ই পুরুষ। কোরিয়াতে বাকি দুনিয়ার মত মিথ্যা হয়রানি মামলার সংখ্যা প্রচুর। কিন্তু এই মন্ত্রণালয় সেসিসব মামলাবাজদের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। আইনি ও আর্থিক সহায়তা দেয়।
২০২১ সালে এই মন্ত্রণালয় পুরুষের বিরুদ্ধে আরো একটা আইন পাস করে। অ্যান্টি-স্টকিং নামের এই আইনের আওতায় অনলাইন কমেন্টের জন্য জেলে যেতে হয়।
ব্যপারটা গুরুতর। ধরুন আপনি অনলাইনে কোন মেয়ের পোস্টে কমেন্ট করলেন বা পোস্ট করলেন। এখন আপনি যাই লেখেন না কেন, মেয়েটা আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে। স্বাভাবিকভাবেই এটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। এই আইন পাশের পর প্রায় ৭৪০০+ মানুষকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে।
৩. ভুয়া অভিযোগ, ধ্বংস জীবন
২০১৮ সালের আগস্টে কোরিয়া হাইস্কুলে পড়া এক মেয়ে অভিযোগ করে, তার টিচার তাকে যৌন হয়রানি করেছে, টাচ করেছে। জিন সং-কিয়ং নামের ওই মধ্যবয়েসী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছিঃছিঃ পড়ে যায়। স্কুল তাকে ততক্ষণাৎ বহিস্কার করে। ভদ্রলোক চাকরি, মান-সম্মান সব হারিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ভয়ংকর ব্যপার হলো, পরবর্তিতে ওই মেয়ে স্বীকার করে যে ক্লাসে ফোন ব্যবহার করায় ওই শিক্ষক তাকে বকেছিলেন। এইজন্যে সে ওই মিথ্যা অভিযোগ করে।
এটা মাত্র একটা ঘটনা। কোরিয়া অনেক ইন্টারনেট নির্ভর দেশ। এবং এখানে ক্যান্সেল কালচার অনেক শক্তিশালী। মীটু চলাকালীন এমন ঘটেছে, সন্ধ্যায় একটা মেয়ে কোনো পুরুষের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আনলো। এখন সেই ব্যাক্তি দোষী নাকি নির্দোষ তা ঠিক করার আগেই তাকে রাতের মধ্যে কোম্পানি বহিষ্কার করতে বাধ্য। পরবর্তিতে সে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে কয়েক মাস লেগে যাবে, এর মধ্যে সব হারাবে।
কোরিয়ার পুরুষ অধিকার সংগঠন দাং-দাং উইয়ের জন্মও এরকম একটা ঘটনার মধ্যে হয়েছিল। এক রেস্টুরেন্ট মালিকের বিরুদ্ধে এক নারী এরকম অভিযোগ দেয়। আদালত কোনো প্রমাণ না দেখেই কেবল ওই মহিলার কথার উপর ভিত্তি করে তাকে ৬ মাসের জেল দেন। পরবর্তিতে সিসিটিভি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট।
এর উপরে আছে ব্লাকমেইল। মানে দুইজনের সম্মতিতে সেক্স হলেও পরবর্তিতে ধর্ষণ মামলার ভয় দেখিয়ে দিনের দিনের পর দিন ব্লাকমেইল করে যাওয়া। বহু কোরিয়ান পুরুষের জীবন গেছে এর ফাঁদে পড়ে। এর মধ্যে অনেক হাই প্রোফাইল ব্যাক্তিও আছেন। যেমন ২০২০ সালে সউলের মেয়র পার্ক-উন সুন, গত ডিসেম্বরে অস্কারজয়ী অভিনেতা কিউন-লি সুন রয়েছেন। অবস্থা মাঝে এত খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে কোরিয়ান ফোরামগুলোতে বিয়ের আগে সেক্স নিষিদ্ধের দাবী ঊঠেছিল।
এইসব মিথ্যা মামলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সেই কুখ্যাত নারী মন্ত্রণালয়।
৪। নারী বিশ্ববিদ্যালয়
কোরিয়াতে নারীদের জন্য আলাদা করে ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। যেখানে বছরে ৩০,০০০ এর বেশী গ্রাজুয়েট বের হয়।
এটা অনেক বড় ধরণের বৈষম্য। কারণ কোরিয়াতে 'লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ আইন' নামে একটি আইন আছে। যেটা বলে, লিঙ্গের কারণে কারো প্রতি কোথাও বৈষম্য করা যাবে না। ফলে বাকি যে ভার্সিটিগুলো আছে সেখানেও মেয়েরা সমান ভাগ বসাচ্ছে।
ছেলেদের জন্য আলাদা করে এরকম ভার্সিটি নেই। অনেক ছেলে পছন্দের সাব্জেক্ট পায় না, অপেক্ষাকৃত নিম্নমানের সাবজেক্টে পড়তে হচ্ছে। পছন্দের সাবজেক্ট না পেয়ে ইয়ার গ্যাপ দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে চলে আসছে আর্মিতে যাবার সময়। ফলে লাইফ গোছানোর আগেই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
তার উপরে মেয়েদের ভার্সিটিগুলো সউলসহ বড় বড় শহরে। মেয়েরা এখানেও বিরাট একটা অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাচ্ছে।
এখানে আরো একটা ব্যাপার আছে। দুনিয়ার সবচেয়ে জঘণ্য কিছু ফেমিনিস্ট আন্দোলন কিন্তু কোরিয়ার এই নারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেই শুরু হয়েছে। নিচে এ ব্যাপারে লেখা হয়েছে।
৫। মেগালিয়া
কোরিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী নারীবাদি আন্দোলনের নাম মেগালিয়া। ২০১৫ সালে এক অনলাইন ফোরামের মাধ্যমে এই মুভমেন্ট শুরু হয়। নারীবাদিরা হাতে ক্ষমতা বা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কতটা নোংরা রুপ নিতে পারে তার বাস্তবরুপ এই মেগালিয়া।
তাদের কিছু কার্যক্রম দেখুনঃ
- তারা পুরষদের ব্যাক্তিগত ছবি, বাড়ির ঠিকানা চুরি করে অনলাইনে পাবলিক করে দিত।
- পুরুষ সহকর্মীদের ড্রিংকের সাথে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রক মিশিয়ে দিত। কয়েকজন স্থায়ীভাবে অসুস্থও হয়েছে।
- তাদের মেম্বাররা স্কুল্পড়ুয়া ছোট ছেলেদের মারাত্মক র্যাগিং করতো। এমনও ঘটনা আছে, , কিন্ডারগার্টেনে পড়া ছেলেকে সুইসাইড করতে বলেছে শুধুমাত্র পুরুষ বলে। ।
- আরেকজন টিচার বলেছিলো টর্চারের মাধ্যমে ছেলেশিশুদের পুরুষাঙ্গ নষ্ট করে দিতে। এই ঘটনা কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল।
এই মেগালিয়া থেকেই শুরু হয় 'Escape the corset' আন্দোলন। এটা ছিলো কোরিয়ান নারীদের বডি শেমিংয়ের প্রতিবাদে আন্দোলন।
অথচ মেগালিয়ার লোগোটা যদি আপনি দেখেন, দুই আঙ্গুল দিয়ে একটা ইশারা। এটা মুলত কোরিয়ান পুরুষদের লিংগের আকারকে কটাক্ষ করে বানানো হয়।
কতবড় ভন্ডামী দেখেছেন? কোরসেট আন্দোলনের মুলকথা ছিলো নারীদের বডি শেমিং করা যাবে না। অথচ তারাই আবার পুরো একটা মুভমেন্ট দাড় করিয়েছে পুরুষের বডি শেমিং করে। তাদের লোগোতে পুরুষের বডি শেমিং, তাদের পুরো কার্যক্রমই দাঁড়িয়ে আছে পুরুষের বডি শেমিংয়ের উপরে।
একটা উদাহরণ, কোরিয়ার ইশু রেলস্টেশনে দুই নারীকে হেনস্থা করা হয়। ঐ দুই নারী মিডিয়াকে বলেন, তারা নাকি দেখতে ভালো না হওয়ায় তাদের সাথে এরকম আচরণ করা হয়েছে। মেগালিয়ার মেম্বাররা এই ঘটনা নিয়ে ব্যপক হইচই করে। প্রায় সাড়ে তিন লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিশ্ববাসীকে দেখাতে চায় যে 'কোরিয়াতে নারীরা কত নির্যাতিত'।
পরবর্তিতে ঐ ঘটনার একটা ভিডিও সামনে আসে। তাতে দেখা যায়, ওই দুই নারী ওখানকার ওই পুরুষদের পেনিস সাইজ নিয়ে ক্রমাগত টিটকারী করে যাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে তারা ধৈর্য্য হারান। অথচ এই পুরো ব্যপারটা মেগালিয়া গোপন করে।
এরকম হাজারো ঘটনা আছে। মেগালিয়া প্রমাণ করে, নারীবাদকে সমঅধিকারের যে আন্দোলন বলা হয় তা পুরোপুরি ভুয়া। এটা কেবলই পুরুষবিদ্বেষ ও সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আন্দোলন।
৬। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মেগালিয়ার একটা অংশ ভেঙ্গে তৈরী হয় ওমাদ। তাদের মত অনুযায়ী, মেগালিয়া অতটা 'কঠোর' ছিলো না। তারা নানান জঘন্য কর্মসুচীর মাধ্যমে কোরিয়ার নারীবাদি আন্দোলনকে অন্য এক পর্যায়ে নিয়ে যায়।
তাদের লোগোতে রয়েছে পিরিয়ডের রক্ত আগুন। এই ফেমিনিস্ট সঙ্গঠনটির কাজ সবই ছিলো ক্রাইম।
- তারা পুরুষহীন এক পৃথিবীর স্বপ্নে পুরুষ খুনে উৎসাহিত করে। এবং কয়েকটা খুনের ঘটনাও ঘটে যায়।
- ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ওমাদের একজন নারী সদস্য অস্ট্রেলিয়ার এক নাবালক ছেলেকে রেইপ করে ভিডিও করে তা পোস্ট করে। আরিউম লি নামের ওই ধর্ষক পুলিশের হাতে আটক হলে ওমাদ ঐ ধর্ষকের পক্ষ নেয়। তার জন্য উকিল ও টাকা পাঠায়।
- এছাড়া তারা হিডেন ক্যামেরার মাধ্যমে সঙ্ঘবদ্ধ্বভাবে পুরুষদের ব্লাকমেইল করে।
৭। ২০২২ এর নির্বাচনঃ এক নতুন কোরিয়ার শুরু
২০১৩ সালের নির্বাচনে হাই পার্ক জিউন নামে কোরিয়াতে প্রথমবারের মত একজন নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মেগালিয়াসহ সবগুলো ফেমিনিস্ট সংগঠন তাকে সাপোর্ট দেয়। একজন নারী কোরিয়ার সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদে গেছে দেখে তাকে ফেমিনিস্ট আইকন বানিয়ে দেন। আপনি জানেন কোরিয়ার ফেমিনিস্ট আইকন কী করেছিল? দুর্নীতি করে ধরা খেয়ে এখন ২৪ বছরের জন্য জেলে আছে।
এরপর ২০১৭ তে আসে লিবারেল জে-ইন মুন। ভোটের আগে তিনি একাধিকবার বলেন, তিনি হতে যাচ্ছেন কোরিয়ার প্রথম প্রকৃত ফেমিনিস্ট প্রেসিডেন্ট। সে প্রমানও দেন। নারী কোটা সহ নানান বৈষম্যমূলক আইন পাস করে নতুন ফেমিনিস্ট আইকন হয়ে ওঠেন। এজন্য তাকে মূল্যও দিতে হয়। ২০২২ সালের নির্বাচনে জেতা দুরের কথা, নমিনেশনই পাননি।
এরপর আসে ২০২২ এর নির্বাচন। পিপল পাওয়ার পার্টি নতুন একজনকে নমিনেশন দেয় - ইয়ল ইয়ুন-সুক। তিনি অনেক ধনী পরিবারের সন্তান। তিনি ছিলেন কোরিয়ার পাবলিক প্রসিকিউটর। জীবনে রাজনীতি করেন নি। কিন্তু আইন পেশায় থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পুরুষের প্রতি আইনি অবিচার দেখেছেন।
তিনি এজন্য কিছু করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রথাগত ইশতেহারের বাইরে এসে সরাসরি ফেমিনিজমের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। মার্কিন 'রক্ষিতা' হয়ে থাকা কোরিয়াতে এরকম ভোকাল আগে কেউ ছিলো না। সবার আগে তিনি বলেন, কোরিয়াতে আগের বৈষম্য আর নেই, তাই নারীকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া পুরুষের প্রতি অন্যায়।
এর ফল ফলে। পোলের পর পোলের আসতে থাকে তার পক্ষে। তরুণেরা একচেটিয়া ভোট দেবার সিদ্ধান্ত নেন। ইভেন হাইস্কুলের ছেলেরা, যারা ভোটার হয়নি, তারাও তার পক্ষে ক্যাম্পেইন করেছিল। অবস্থা বেগতিক দেখে বিরোধী দলীয় নেতা পর্যন্ত স্বীকার করেন, যে কোরিয়াতে সিস্টেমেটিক বৈষম্য নেই।
ভোট হয়। প্রতি চার জন তরুণের তিন জনের ভোট পান ইয়ুন। নির্বাচিত হন কোরিয়ার ১৩ তম প্রেসিডেন্ট। শুরু হয় কোরিয়ার নারীবাদবিরোধী নতুন অধ্যায়ের।
৮। কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট
ইয়ুন সুকের পিপল পাওয়ার পার্টি (পিপিপি) বিশ্বের তৃতীয় রাজনৈতিক দল যারা সরাসরি ফেমিনিজমের বিরোধীতা করে পার্লামেন্টে গেল। এর আগে স্পেনের 'ভক্স' এবং ইংল্যান্ডের 'জাস্টিস ফর মেন অ্যান্ড বয়েজ' পার্লামেন্টে গেলেও অ্যান্টি-ফেমিনিস্ট কেউ প্রেসিডেন্ট হবার ঘটনা এই প্রথম।
- প্রেসিডেন্ট ইয়ুন সুক নির্বাচিত হয়েই সর্বপ্রথম যে জিনিসটা অ্যাড্রেস করেন সেটা হলো, কোরিয়াতে নারীর প্রতি সিস্টেমেটিক বৈষম্য এখন আর নেই। দীর্ঘদিন লিবারেলরা ক্ষমতায় থাকাতে নারীকে বরং অতিরিক্ত সুবিধাই দিয়ে ফেলেছে।
- নারীর প্রতি সিস্টেমেটিক বৈষম্য যেহেতু আর নেই সেহেতু এরকম একটা মন্ত্রণালয়, যাদের একমাত্র কাজ কোরিয়ান পুরুষদের জেলে ঢোকানো, তারও আর দরকার নেই। তিনি তার নির্বাচনী ইশতেহারে বলেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি সবার আগে এই মন্ত্রণালয় বিলুপ্ত করবেন।
প্রেসিডেন্ট হবার পর এক ফেমিনিস্ট তাকে জিজ্ঞেস করে, আপনি কি সত্যি সত্যি এই মন্ত্রণালয় ভেঙ্গে দেবেন? উত্তরে প্রেসিডেন্ট সুক বলেন, "তোমার কি মনে হয় আমার নির্বাচনি ইশতেহারে আমি ফাজলামো করেছি? আমি অবশ্যই এটা করবো"
- প্রেসিডেন্ট সুক তার কেবিনেটে মাত্র তিনজন নারীকে রেখেছেন। উল্লেখ্য, তার পূর্ববর্তি প্রেসিডেন্ট মুন-জে-ইনের কেবিনেটে মোট নারী ছিলো ১৬ জন।
- তিনি বলেন, সরকার এই ফেমিনিস্ট গুন্ডাগিরির পেছনে অনেক খরচ করেছে। আর নয়। যদি কেউ জেন্ডার ইকুয়ালিটি আনতে চায় তাহলে সে যেন তা নিজের পয়সায় করে।
- কোরিয়াতে মিথ্যা রেইপ ও সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট মামলা অনেক বড় সমস্যা। প্রেসিডেন্ট সুক এরকমের মিথ্যা মামলার জন্য বড় অংকের জরিমানার ব্যবস্থা করেন।
গত বছরের এক ডাটা থেকে জানা যায়, পিপিপি ক্ষমতায় আসার পর পুরুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে পালটা মামলার সংখ্যা ৬৮.৮% বেড়েছে। অলরেডি কয়েকজন নারীর জেল হয়েছে।
- তিনি বলেন, কোরিয়ার জন্মহার কমে যাবার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী এই ফেমিনিস্টরা।
- পিপিপি ক্ষমতায় আসার পর ২০২৩ সালে মোট ৮টা মন্ত্রণালয়ের সবগুলো নারীবিষয়ক প্রকল্পের বাজেট অর্ধেক কেটে নেওয়া হয়েছে।
- উনার স্ত্রী কিম কেওন হি-ও কম যান না। ভোটের আগে তিনি বলেছিলেন, "এসব নারীরা তখনই মীটু এর অভিযোগ করে যখন তারা যথেষ্ট পয়সা না পায়"
- কোরিয়ার আরেক রাজনীতিবিদ লি জুন সেওক বলেন, "নানা দেশের মত কোরিয়াতেও টেররিস্ট আছে। কোরিয়ার টেররিস্ট হলো এই ফেমিনিস্টরা। নাইন ইলেভেন ৩০০০ মানুষের জীবন নিয়েছে। কিন্তু 'ওমাদ' (কোরিয়ার কট্টর নারীবাদি গ্রুপ) - এরা তার চেয়ে অনেক বেশী কোরিয়ান পুরুষের জীবন ধ্বংস করেছে।
৯। কালচারাল শিফট
কোরিয়া এখন অনেক গুরুত্বপূর্ন কালচারাল শিফটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। গত ২০ বছর ধরে লিবারেল দলগুলো ক্ষমতায় থাকার কারণে পুরুষের প্রতি বৈষম্য চরমে। কিন্তু নতুন প্রজন্মে যে অবিশ্বাস্য নারীবাদ বিরোধীতা জন্ম নিয়েছে তা পশ্চিমা কালচারাল প্রভাবকে চ্যালেঞ্জ করছে।
ব্যপারটা বোঝার জন্য কোরিয়ার পুরুষদের আমরা তিন বয়সের ভাগে ভাগ করি।
- ৬০+ বছর বয়সী পুরুষঃ এরা সবচেয়ে বয়স্ক প্রজন্ম। ট্রাডিশনাল ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী, মানে পুরুষ ঘরের কর্তা আর নারী অবশ্যই তার স্বামীর আনুগত্য করবে। এদের কেউ কেউ কোরিয়ান যুদ্ধে লড়ে দেশ স্বাধীন করেছে। ২০২১ সালের এক জরিপে জানা যায়, এই বয়সীদের ৭২% রক্ষণশীল।
- ৩০-৫০ বছর বয়সী পুরুষঃ এই গ্রুপটা কোরিয়ার উন্নয়ন নিজ চোখে দেখেছে। একইসাথে পুরো পশ্চিমা কালচার তাদের গ্রাস করেছে। এদের মধ্যে পশ্চিমে পড়তেও গিয়েছিল কেউ কেউ। ফলে বিরাট সংখ্যক হলো সিম্প, এবং বিশ্বাস করে যারা নারী অধিকার নিয়ে কথা বলে না তারা ব্যাকডেটেড। কোরিয়াতে যত পুরুষ-ফেমিনিস্ট পাবেন তারা সব এই বয়সের মধ্যেই।
- ১৫-৩০ বছর বয়সী পুরূষঃ আগের একই জরিপে দেখা যায় কোরীয় তরুণদের ৭২%ই নারীবাদবিরোধী! এটা কিভাবে হলো? পুরো দুনিয়ার তরুণদের মধ্যে লিবারেল আইডিয়া গ্রহণ করার হার সবচেয়ে বেশী। সেখানে কোরিয়া পুরোপুরি উলটো। অর্থাৎ, মুরব্বীদের চাইতে তরুণরাই বেশী নারীবাদবিরোধী।
ফেমিনিস্ট ইউটিউবার জি-ইউন বিবিসিকে বলেন, "যদি কেবল বয়স্ক জেনারেশনরাই নারীবাদ ঘৃণা করতো তাহলে মানা যেত। আমরা আশাবাদী হতে পারতাম যে, সেই ঘৃণা একসময় শেষ হয়ে যাবে, এবং নতুন প্রজন্ম নারীবাদ গ্রহণ করবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের বিরুদ্ধে যত ঘৃণা আসছে তা নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে। তাই কোরিয়াতে নারীবাদের আর কোনো আশা নেই।"
১০। কর্পোরেট ব্যাকল্যাশ
কয়েক বছর আগে কোরিয়ার সুপারশপ কোম্পানি জিএস একটা অ্যাডে হাত ব্যবহার করে যা অনেকটা মেগালিয়ার লোগোর মত দেখা যাচ্ছিল। এরপর বয়কট শুরু হয়।শেয়ারের দাম পড়ে যায়, বোর্ড মাত্র একটা ছবির কারণে সিইওকে বরখাস্ত করে।
কোম্পানীগুলো ইন্টারভিউতে মেয়ে ক্যান্ডিডেটকে সরাসরি প্রশ্ন করা হচ্ছে, তুমি কি ফেমিনিস্ট? ফেমিনিস্ট হলে চাকরি হবে না। সবচেয়ে সম্প্রতি গত ডিসেম্বরে কোরিয়ার গেমিং কোম্পানি 'নেক্সন গেমস' এই প্রশ্ন করে এবং মেয়েটার চাকরি হয়নি।
গেমারগেইট নামের এক গেমিং কোম্পানির একজন নারী এমপ্লয়ি "Girls do not need a prince" লেখা ছবি ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে। এরপর তার চাকরি চলে যায়।
১১। ফেমিনিস্ট একটা গালি
এটা শুধু যে অনলাইন ট্রোল তা না, বরং কোরিয়াতে বেশ বড় ইস্যু। এতই সিরিয়াস যে অন্ততঃ ১০টা পশ্চিমা মিডিয়া এই মর্মে রিপোর্ট করে যে, কোরিয়াতে ‘ফেমি’ শব্দটা কিভাবে নোংরা শব্দে পরিণত হলো?
- নারী কেপপ গ্রুপ এ-পিংকের মেম্বার নেউন ইন্সটাগ্রামে একটা ছবি পোস্ট করে, যেখানে তার ফোনের কেসে এই লেখাটা দেখা যায় "Girls can do anything." এরপর ব্যাপক সমালোচনার শুরু হয়, কোরিয়ার অনলাইনে ফ্যানরা সন্দেহ করতে শুরু করে যে সে ফেমিনিস্ট কিনা। তীব্র সমালোচনার মুখে নেউন ছবি ডিলিট করে, ক্ষমা চায় ও স্পষ্ট করে যে সে ফেমিনিস্ট না।
- একই রকম ঘটনা। কেপপ গ্রুপ রেড-ভেলভেটের মেম্বার আইরিন এক ইন্টারভিউতে বলে সে "কিম জি ইউং, জন্ম-১৯৮২ বইটা পড়েছে। (বলে রাখা ভালো, এই বইটা এবং 'ফ্লাওয়ারস অব ফায়ার' এই দুটো কোরিয়াতে ফেমিনিস্ট বই হিসেবে পরিচিত। প্রথমটা আমার দেখার সুযোগ হয়েছে।)
এরপর তার ফ্যানরা ক্ষেপে যায়। বলতে শুরু করে আইরিন ফেমিনিস্ট। তাদের গ্রুপের মার্চ রাস্তায় ফেলে দেয়, সউলে আইরিনের ছবি পোড়ানো হয়। এক পর্যায়ে সেও ক্ষমা চায় এবং বলে যে সে ফেমিনিস্ট না।
- ২০২১ সালের টোকিও অলিম্পিকে আন-সান-ও নামের এক তীরন্দাজ দুটো স্বর্ণপদক পায়। কিন্তু তার চুল ছোট থাকায় সবাই ধরে নেয় সে ফেমিনিস্ট। ফলে দুটো অলিম্পিক স্বর্ণপদক জিতেও সে আড়ালে চলে যেতে বাধ্য হয়।
- কোরিয়াতে মেয়েদের একদম ছোট চুল থাকলে তাকে ফেমিনিস্ট হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এবং এজন্য অনেকে হামলার শিকারও হয়েছে। কমেন্টে কিছু লিংক থাকবে।
আপনি ভাবতে পারেন? ফেমিনিজমের বিরুদ্ধে কতটা সচেতনতা তৈরি হলে সেলিব্রেটিদেরকে সংবাদ সম্মেলন করে স্পষ্ট করতে হয় যে সে ফেমিনিস্ট না! এজন্য সাধারণ মেয়েরা তো বটেই, খোদ কোরিয়ান ফেমিনিস্টদেরও একটা ইন্টারভিউতে দেখেছিলাম - তারা নিজেদেরকে ফেমিনিস্ট পরিচয় দিতে ভয় পাচ্ছে। কোরিয়াতে কেউ চায় না এই 'ফেমি' ট্যাগ তার গায়ে লেগে যাক।
১১। কোরিয়ার নারীবাদবিরোধী সংগঠন
নিউ মেন সলিডারিটি কোরিয়ার সর্ববৃহৎ নারীবাদবিরোধী সংগঠন। আমার দেখা সবচেয়ে সংগঠিত নারীবাদবিরোধী সংগঠন এটা। ইয়ুন-সুকের জয়ের পিছনে তাদের ভুমিকাও অনেক। এমনকি নারী মন্ত্রণালয় বিলুপ্তির দাবীও তারাই প্রথম তুলেছিলো।
তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ৫ লাখ ৭৩ হাজার সাবস্ক্রাইবার আছে। সংখ্যাটা আসলে কেমন তার আইডিয়া দিই। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এরকম কোরিয়ান পুরুষ আড়াই কোটি। হাইপোথিটিকালি, প্রতি ৫ জন কোরিয়ান পুরুষের একজন এই চ্যানেলে রয়েছেন।
এর সাথে তুলনা করুন, ২০ কোটি বাংলাভাষী ইন্টারনেট ব্যবহারকারী থাকলেও বাংলা ভাষায় নারীবাদবিরোধী কমিউনিটির সদস্য মাত্র ৫০ হাজার।
তারা কয়েকটি বিভাগে কাজ করে থাকে। নারীবাদবিরোধী প্রকাশনা, পুরুষ অধিকার, আইনি সহায়তা এবং সাইবার প্রতিরোধ। তাদের সাইবার টিম অনেক ইফেক্টিভ। কোরিয়ার অনেক ফেমিনিস্ট নেত্রীর ক্যারিয়ার শেষ করতে সক্ষম হয়েছে তারা। এমনো ফেমিনিস্ট লীডার আছে যারা এখন বাড়ির বাইরে বেরোতে পারে না।
কোরিয়ার আরেকটি পুরুষ অধিকার সংগঠনের নাম ' দাং দাং উই'। তারা মুলত মিথ্যা মামলার শিকার পুরুষদের আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। উপরে বলা রেস্টুরেন্টের ঘটনার পর মুন নামের এক পেশাজীবী চাকরি ছেড়ে এই সংগঠন শুরু করেন।
এছাড়া কিছু অ্যান্টি-ফেমিনিস্ট কেপপ আর্টিস্ট রয়েছেন, যারা নারীবাদ ঠেকাতে কাজ করছেন। সবমিলিয়ে নন-মুসলিম কান্ট্রি হিসেবে কোরিয়াতেই সবচেয়ে বেশি নারীবাদবিরোধী কার্যক্রম চলছে।
(প্রায় ১২০ টার মত রেফারেন্স রয়েছে। কমেন্টে দেওয়া হবে।)

Post a Comment

0 Comments