"ইসলামফোবিয়া"

 



বাংলাদেশে দাঁড়ি রাখা, নামাজ পড়া যে মেইনস্ট্রিমে কত বড় অপরাধ, এইটা মুশফিক মাহমুদুল্লাহর এই ঘটনা থেকেই বুঝতে পারবেন।
শুধু ক্রিকেট না, উচ্চশিক্ষাতেও এই ব্যাপারটা খুব ভালো করেই আছে।
কিছু হলেই, ও, তুমি তো হুজুর, হুজুর হয়েও পারো না?
সবচে বেশি সাফার করে বোরকা পরা বা নিকাব পরা মেয়েরা। আমার বহু ফ্রেন্ড এর থেকে শুনেছি, শুধু বোরকা পরার "অপরাধে" কত মেয়েকে আজেবাজে কথা বলা হয়েছে, বের করে দেওয়া হয়েছে।
এন্ড সবচে ভয়ঙ্কর কথা কী জানেন? স্যাররা না, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অপারেশনে নেতৃত্ব দেন ম্যাডামেরা।
না, আমি বলছি না যে উল্টোটাও নাই। অবশ্যই বাংলাদেশের তৃণমূলে পোশাকের জন্য মেয়েদের হেনস্তা হতে হয়। ব্যাড কমেন্টের স্বীকার হতে হয়। টপ জিনস পরা মেয়েটার ক্যারেক্টার নিয়েও প্রশ্ন উঠানো হয়।
তবে এইগুলা করে মূর্খ বা কিছুটা নিচের শ্রেণীর লোকজন।
বাট আপার ক্লাস বা শিক্ষিতরা আবার এইটার সমালোচনা করে নিজেরাই আবার বোরকা পরাদের, দাঁড়িওয়ালাদের এটাক করে বসে।
অর্থাৎ বাংলাদেশের শিক্ষিত শ্রেণীটাও আসলে মানসিকতার দিক থেকে ছোটলোকই।
ক্রিকেটে লিটন আর সৌম্যকে নিয়েও নানান সময় সাম্প্রদায়িক কটুক্তি করা হয়েছে। ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলা হয়েছে। এবার মুশফিক, মাহমুদুল্লাহও সাম্প্রদায়িকতার স্বীকার হলেন। শুধুমাত্র ধর্ম প্র্যাকটিসের "অপরাধে" তাদের নামে এমন কোন কুৎসা বা বাজে কথা নাই, যেইটা কাল থেকে বলা হয় নাই।
তো, এই যে যারা সুযোগ পাইলেই লিটনের ধর্ম টানে বা মুশফিকের দাঁড়ি নিয়ে খোঁচা মারে, এদের চিনে রাখেন। এদের পরিত্যাগ করেন। এদের কাছে আমি আপনিও নিরাপদ না। আজ মুশফিকের একটা কিছু পছন্দ হয় নাই, কাল আপনারও কিছু ওদের পছন্দ হবে না, আপনারেও তখন ফাসাইয়া দেবে।।
জিনস পরা মেয়েটার অধিকার যেমন আমাদের চেয়ে যেতে হবে, বোরকা পরা মেয়েটাও যাতে অন্যায়ের স্বীকার না হয়, সেদিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে।
লিটনের ধর্ম টেনে বাজে কথা বলা লোকটা যেমন আমাদের শত্রু, নামাজ পড়ার কারণে মুশফিকরে মৌলবাদী বলা সুশিলটাও তেমন আমাদের শত্রু।
একটা অন্যায় দিয়ে আরেকটা অন্যায় যেন আমরা জাস্টিফাই না করি।
ধর্ম বা পোশাকের জন্য কাউকে কটাক্ষ করাটাকে যেন আমরা যে কোন মূল্যে প্রতিরোধ করতে পারি।
এবং প্রতিরোধের সময় ভিক্টিম কোন ধর্মের বা কোন পোশাকের, সেই প্রশ্ন যেন কখনও আমাদের মনে না আসে।
একটা সম্প্রীতির সমাজ গড়তে হলে লিটনকে গালি দেওয়া ভুরুঙ্গমারির মদন যেমন ক্ষতিকর, মাহমুদুল্লাহকে কটাক্ষ করে টেন মিনিটস সাকেপ বিন রাশিদও সমান ক্ষতিকর।
দুজনেই সমান ছোটলোক। টেন মিনিটস সাগোলটা শিক্ষিত ছোটলোক, আর গ্রামের মদনটা অশিক্ষিত ছোটলোক।
আমরা যেন এদের আলাদা করে না দেখি।
তৃনমূলের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে কথা বলতে বলতে আমরা যেন এইসব শিক্ষিত লোকজনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা ভয়ঙ্কর ইসলামফোবিয়ার কথা ভুলে না যাই!!

Post a Comment

0 Comments