দাদিকে দেখতাম রমজান চলে গেলে বসে বসে কানতো।
বাড়াবাড়ি মনে হতো। মন খারাপ ঠিক আছে, বাট এতো আবেগ থাকতে হবে কেন?
এরপর আর্জেন্টিনা কাপ জিতলো। অবাক হয়ে দেখলাম, আমি নিজে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতেসি।
বুঝলাম, আবেগ শুধু দাদির না। আমারও আছে। খালি জায়গাটা আলাদা। উনি যতটা আবেগ দিয়ে ধর্ম প্র্যাকটিস করতেন, আমি ততটা আবেগ দিয়ে খেলা দেখতাম।
হজ্জ্ব ওমরাতে যাইয়া হাজরে আসওয়াদে চুমু খাওয়ার হুড়োহুড়ি দেখে যে লিবারেল মুখ বাকায়, সেই আবার আতিফ আসলামের কনসার্টে যাইয়া তারে ধরে চুমু খায় পাগলের মতো।
নিজের বেলায় ঠিক আছে। অথচ আরেকজনের আবেগ নিয়া কত হাসি তামাশা, ক্ষ্যাত বলা।
শহরের লোকজন গ্রামে গেলে পুকুরের ঘাটলায় বসে ছবি উঠাবে, সরিষা ক্ষেতে ছবি উঠাবে, আম গাছ জাম গাছে ছবি উঠাবে। ওটা পশনেস।
আর গ্রামের একটা ছেলে এসে যখন বসুন্ধরা বা যমুনার সামনে ছবি তুলবে, তখন সে হয়ে যাবে গ্রামের চাচাতো ভাই। কেন?
নবিজীরে যখন গালিগালাজ করা হলো, লিবারেলরা সেই কী রাগ। একেকজন মানবতার মহান বন্ধু। ডলতে লাগলেন, যে যার মত প্রকাশ করুক। এতো অসহিষ্ণু হলে কেমনে হবে?
বাট কিছুদিন আগে হিরো আলম রবীন্দ্রনাথকে গালি দেননি। জাস্ট উনার একটা গান গেয়েছিলেন। ওতেই হিরোরে মামলা দিয়ে মুচলেকা নেওয়া হলো। রবীন্দ্রনাথের অমর্যাদা তারা মানলেন না। অথচ এরাই আমারে আপনারে নবীর অমর্যাদা মেনে নেওয়ার সবক দিসিলো।
ভোরে উঠে ফজরের নামাজটা আমাদের কখনোই পড়া হয়না। বরং কেউ পড়লে অবাক লাগে। মিস করলেও খারাপ লাগে না।
অথচ কত কনসার্টে আমরা রাত ভোর করে দিয়ে আসি। আমাদের ঘুম পায় না। বরং পরের কনসার্টের জন্য ক্যালেন্ডার দাগাইয়া রাখি। মিস যাতে না হয়।
তো, কথা হলো, মানুষ ইমোশনাল প্রাণীই, লজিক্যাল প্রাণী না। কাজেই, অন্যের ইমোশনকে "ছোট" বা "অসম্মান" করার কোন প্রয়োজন নাই।
কারণ, আপনি নিজেও হয়তো ঐখানে ইমোশনাল না, বাট অন্য কোনখানে ইমোশনাল, অন্য কোথাও আপনার দুর্বলতা।
আপনার ইমোশন আপনার কাছে সত্য, তবে আরেকজনের ইমোশনকে কেন আপনার মিথ্যা বলতে হবে?
কুরআন পড়ে চোখের পানি ফেলা মানুষটা খ্যাত আর গান শুনতে শুনতে কান্নাকাটি করা মানুষটা খুব ক্ল্যাসি, এই ফাত্রা মানদণ্ড বানাইসেটা কে?
0 Comments