মাস্টার্স পাস করা একটা ছেলে মাত্র ১৫ হাজার টাকা সেলারিতে চাকুরী করে

 মাস্টার্স পাস করা একটা ছেলে মাত্র ১৫ হাজার টাকা সেলারিতে চাকুরী করে। সকাল ৮ টায় অফিসে আসে। সন্ধ্যা ৬ টায় বের হয়।

বিভিন্ন গ্রুপে জব ভ্যাকেন্সির পোস্ট গুলো নিয়মিতই দেখা হয়। আট ঘন্টা ডিউটি। ১৬ হাজার টাকা বেতন। তাও আবার ঢাকা শহরের মতো জায়গায়।

কোয়ালিফিকেশন লাগবে।

এক্সপেরিয়েন্স থাকলে প্রায়োরিটি পাবে।

আর লবিং থাকলে তো কথাই নাই। কোয়ালিফিকেশন, এক্সপেরিয়েন্স আর যোগ্যতার মাথায় গুলি মেরে চাকুরী চলে যাবে কোন অযোগ্য লোকের হাতে।

ছেলেগুলোর স্বপ্ন এতেও দমে যায় না।

... স্যার ...দুই হাজার টাকা কম দিয়েন। তবুও পজিশনটাতে আমাকেই নেন। এরকম অসংখ্য অনুরোধ শোনা যায়।

চাকুরীদাতারাও বসে নাই। সুযোগ পাইলে কে ছাড়ে ?

হ্যাঁ... মাত্র ১৪ হাজার টাকার বিনিময়েই মাস্টার্স পাস একটা ছেলেকে হায়ার করা হয়।

ভাইরে, দুনিয়ার সবাই বিড়ি খেয়ে ধোঁয়া উড়ানোর জন্য রাতে জাগে না। সবাই মোবাইলের বিল তোলার জন্যও নির্ঘুম রাত কাটায় না।

সবার জীবনে রাতটা এক হয়ে নামে না।

কেউ ওভার টাইম করার জন্য টানা ১৬ ঘন্টা ডিউটি করে। অতিরিক্ত টাকাটা ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করে।

পৃথিবীর সকল ছেলেরা রাতে তাস খেলে আর বাংলা খেয়ে সময় নষ্ট করে না ভাই। অন্য রকম একটা গল্পও কিন্তু আছে।

বোনটা বড় হয়েছে। বিয়ে দিতে হবে। ভাইটা ভালো চাকুরী না করলে ভালো ঘর থেকে প্রস্তাব আসে না। না চাইলেও তাই ১৬ হাজার চাকুরীকে ২৬ হাজার টাকার চাকুরী বলে চালাতে হয়।

ছোট ভাইটা পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার একটা খরচ আছে না? ভাইয়ের টাকায় মজা মাস্তি করার একটু স্বাদ আহলাদ হয় না?

দিন শেষে ১৬ হাজার টাকা কেটে কুটে হাতে থাকে হয়তো জমা থাকে হাজার দুয়েক অথবা এর থেকেও কম।

এই টাকায় আয়েস করে আর যাই হোক মধ্যবিত্ত একটা প্রেম করাও সম্ভব না। তাই নিজের দিকটা না হয় বাদই থাকলো।

এই ছেলেগুলোর জীবনে তাই প্রেম নাই। প্রিয়াও নাই। তবে হাহাকার আছে। প্রেম আর প্রিয়া - দুটোর জন্যই।

ও হ্যাঁ ... আরেকটা জিনিস আছে। সেটা হলো স্বপ্ন।

সাধারন জ্ঞান পড়ে বিসিএস টেকার স্বপ্ন। দিন রাত বীজগনিত,পাটিগনিত মিলিয়ে রিটেনে পাশ করার স্বপ্ন।

ভাই, ২৫ হাজার টাকা বেতন পেলেই খুশি আমি। এক টাকাও বেশি লাগবে না। বিশ্বাস করেন ভাই একটা টাকা বেশি লাগবে না। পরবার নিয়ে শান্তিমতো চলতে পারলেই খুশি।

ছেলেগুলো হাহাকার নিয়ে স্বপ্নপূরনে লেগে থাকে।

বিসিএস না হোক ব্যাংকে তো হবে।

ব্যাংকের জেনারেল অফিসার না হোক, ক্যাশ অফিসার তো হবে?

ক্যাশ অফিসার না হোক অন্তত সেকেন্ড গ্রেডের একটা সরকারী চাকুরী?

আচ্ছা সরকারী চাকুরীও না হোক, অন্তত বেতনটা বাড়ুক হাজার পাঁচেক টাকা?

ছেলেগুলোর স্বপ্ন দৌড়াতে থাকে এভাবেই।

সার্টিফিকেটের সিজিপি এর সাথে পাল্লা দিয়ে দৌড়ানর গল্প।

প্রিয়াকে না পাওয়ার হাহাকারের সাথে পাল্লা দিয়ে এগোনর গল্প।

একটু ভালো থাকার জন্য, সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার জন্য একা একা চলার জন্য।

গল্পটা মোটিভেশনের না। গল্পটা ভালো থাকার এবং ভালো রাখার।



Post a Comment

0 Comments