ভিক্ষুক

 তারিখ: ০৩.০১.২৫

'ভিক্ষুক' যাদের দেখা মেলে আমার আপনার বাসা/রাস্তাঘাটের পাশেই। দেহে ছেঁড়া মলিন কাপড়, রুক্ষ চুল, শুকনো মুখ এই তো তাদের পরিচয়। সারাদিন তারা পথঘাট ও এবাড়ি ও বাড়ি ঘুরোঘুরি করেন তাতে হয়তো বা সারাদিনের খাবারের জোগাড়টা হয়, নয়তো খালি পেটেই সেই দিনটি পুষিয়ে নিতে হয়। একসময় তাদের মধ্যে কারো অবস্থাও হয়তোবা আমার-আপনার মতোই ভালো ছিলো, তারাও একটা সময় তিনবেলা পেট পুরে খেয়ে দিন কাটিয়েছে, কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ তাদের পরিচয় তারা ভিক্ষুক। তাদের মধ্যে থেকে কেও হারিয়েছেন চাষের শেষ জমিটি নদীর গর্ভে, কাউকে হয়তো ঘর থেকে বের করেছে বৃদ্ধ বয়সে তাদের স্বার্থপর সন্তান আবার কারো ইতিহাস এর থেকেও শোচনীয়। এরা একবেলা না খেয়ে থাকলেও কেউ খোঁজ নেয় না, আবার ক্ষুধার জ্বালায় মুখ ফুটে খেতে চাইলে মুখের ওপর লাগানো হয় ঘরের দরজাটাও। পরনের জামাটা পুরনো হলেই তা আমরা ফেলে দেই ডাস্টবিনে, কিন্তু রাস্তার পাশে থাকা ছেঁড়া কাপড় দেহে জড়ানো মানুষটি আর চোখে পড়ে না। যে যুগে এক কাপ লাল চা ছয় টাকা, সেই যুগে আমরা এক টাকায় ভিক্ষুককে বিদায় করতে চাই। এরা এমন মানুষ যাদের কারো রয়েছে বৃদ্ধ বয়সের অসহায়ত্ব অথবা কেউ কঠিন রোগের খরচ যোগাতে ছুটেন এই পেশার পথে। সেই অসহায় ভিক্ষুক এর বেশ ধরেই এই পেশায় প্রবেশ করে সুস্থ স্বাভাবিক কিছু মানুষ, শারীরিক পরিশ্রম করে অথবা ব্যবসা করার চেয়ে তারা চায় বিনাশ্রমে টাকা আয় করতে, যার জন্য শুরু করে কারো অসুস্থতা বা নিজের অসহায়ত্বের নাটক। তারা যদি জানতো যে এ ভিক্ষুক নামের পেছনে রয়েছে কতোশত অসহায় ও সহায়-সম্বলহীনের গল্প তাহলে এ পেশায় তারা কোনদিনই জড়িয়ে পড়তো না। একজন ভিক্ষুকের জীবন যদি কেউ বুঝতে চায় তাদের জীবনের সংগ্রাম উপলব্ধি করতে চায় তবে রেলস্টেশন কিংবা তাদের বসবাসের এলাকাগুলোই গিয়ে দেখে আসুক, মন থেকেই কিছু করতে আগ্রহ জাগবে তাদের জন্য।


Post a Comment

0 Comments