- আপনি চাকরি করেন?
- না
- ওহ্, হাউজওয়াইফ?
- হুম~
বর্তমানে নারীদের ঘরবিমুখী হওয়ার প্রবণতা আর চাকরির জন্য তীব্র প্রতিযোগিতা পরিলক্ষিত হওয়ার পেছনে দায়ী- সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বাসনা। সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে কেন নারীকে ঘর ছেড়ে বাহিরে দৌঁড়াতে হবে, কেন নিজেকে গৃহিণী হিসেবে পরিচয় দিতে অধিকাংশ নারীরা হীনম্মন্যতায় ভোগেন, তার উত্তর পেতে হলে বৃহৎ পরিসরে আমাদের দৃষ্টি নিক্ষেপ প্রয়োজন ।
পর পর দুটি বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হওয়ার পূর্বের চিত্রে দৃষ্টিপাত করি। নারীরা তখন ছিলেন সমাজের প্রধান কারিগর। কেননা সমাজের মৌলিক খুঁটি তথা পরিবারকে সুনিপুণ ভাবে গড়ে তোলার জন্যে তাঁরা ছিলেন Fully Dedicated। তার প্রমাণ- প্রায় ৫০ বছর ধরে Bestseller বই এর তালিকায় থাকা মিসেস Beeton এর ' Book of Household Management ' নামক বইটি।
বিশ্ব যখন দুটি বড় বড় যুদ্ধ witness করল তখনই শ্রমবাজারে পুরুষের সংকট দেখা দিল। সমাজের মূল ভোক্তা তথা পুঁজিপতিদের লালবাতি নেভাতে তাই প্রয়োজন হলো নারীদের ঘর থেকে বাহিরে এনে শ্রমবাজারে নিয়োগ করা। এক্ষেত্রে পাওয়া যেত আরও সুবিধা কারণ পুরুষের অর্ধেক বেতন দিয়েও Hire করা যেত নারীদের।
যন্ত্রভিত্তিক সমাজব্যবস্থা থেকে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সাথে সাথে নারীদেরকেও পড়াশোনা করে চাকরি পেয়ে ক্যারিয়ার গঠনে উদ্বুদ্ধ করা হয়। অন্যদিকে পরিবারের জন্যে dedicated "মা" কে হেয় করা হয় এই বলে -' You Don't Have A Career'। কিন্তু এই ক্যারিয়ার গঠন করে নারীরা আসলে কতটুকু লাভবান হন?
একটা পরিবারের প্রধান সমন্বয়ক হলেন একজন "মা"। সেই মা কে যখন ঘর থেকে টেনে বাহির করা হয় তখন পরিবারের সন্তানরা অর্থাৎ ভবিষ্যৎ প্রজন্মটাই হয়ে পড়ে বিপদসংকুল যা আজকের ভঙ্গুর এই সমাজের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। বাহবা পাওয়া যায় এই হিসেবে যে, নারী তো বাহিরে গিয়ে টাকা আয় করছেন, সমাজের উন্নয়নে অংশ নিচ্ছেন। কিন্তু ঘরে থেকে তার সন্তানের পিছনে যে শ্রমটা তিনি দিতেন সেটা পেতে ব্যয় হয় আরও অধিক অর্থ। এত অর্থ ব্যয় করা সত্ত্বেও নড়বড়ে হয়ে যার সমাজের মূল খুঁটিটাই, উপরে উপরে উন্নয়ন দিয়ে তখন আর লাভটাই বা কোথায়?
ওদিকে দিনশেষে বাড়ি ফিরে একজন পুরুষ যদিও বা পারে বসে থেকে বিশ্রাম নিতে, একজন নারী তা পারেন না নিতান্তই তার ফিতরাত এর কারণে। প্রকৃতিগত ভাবেই মেয়েরা মা হওয়ার জন্যে তৈরি হয়। আবার সাথে রয়েছে PMS এর ধাক্কা, Sensitive Mental Condition and Health issues। সুতরাং পুঁজিপতি ধনকুবেরাই শেষমেশ লাভবান হয়, ওদিকে একজন Working Mother এর হয় যারপরনাই অবস্থা।
এতকিছু যদি নারীরা বুঝতেনই তাহলে যথেষ্ট প্রয়োজন ছাড়া কোনোদিনই তারা নিজেদের উপর এই জুলুমটা করতেন না। কেন করেন? কারণ World business এর কলকাঠি নাড়তে থাকা Western World কিছু Alluring words ব্যবহার করে মূল নকশাটি ঢেকে রেখে এত লোভনীয় ভাবে বিষয়গুলো উপস্থাপন করে যা সহজেই হয়ে ওঠে গ্রহণযোগ্য। Women Empowerment এর নামে যে আসলে নারীদের সব Energy শুষে নিচ্ছে তারা, এটা অনেকেই তাই বুঝতে পারেন না।
এছাড়াও নারীদের ঘরের বাইরে টেনে আনার পেছনে রয়েছে পুরুষ সমাজের নিজস্ব অগণিত স্বার্থ, যা বিস্তারিত জানতে ও বুঝতে অনেক গভীর study করা প্রয়োজন। আপাতত সংক্ষেপে ছোঁয়া দিয়ে গেলাম। আগ্রহী হলে আরও জানতে পারবেন। আর এই westernization এর মূল হোতা western world এর নিজেদের নারীসমাজের আসল চিত্র যদি আপনার দেখার সুযোগ হয়, তাহলে আপনি অবশ্যই বুঝতে পারবেন, এত এত বছরের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত হয়ে তাদের কি miserable অবস্থা। অভিনেত্রী আর টিকটকারদের দেখলে কিন্তু হবে না। Dive deeper!
পরিশেষে বলব, পুরো বিশ্ব এখন একটা Phase এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে - Westernization। আমাদের দেশেও জনগণ নির্দ্বিধায় গিলে নিচ্ছেন তাদের মতাদর্শ। Eventually নারীরা হচ্ছেন বহির্মুখী, ঘরবিমুখী। সমাজ তাই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। Can't you see it?
~ জাফনাহ্ জারীফ
৬৫ তম এমবিবিএস
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
0 Comments