"আপনি কি জানেন, আমেরিকাতে ভেগানদের কত শতাংশ নারী?"

 

আপনি কি জানেন, আমেরিকাতে ভেগানদের কত শতাংশ নারী? আশি (৮০) শতাংশ!!
অর্থাৎ, প্রতি ১০ জন ভেগানের ৮ জনই নারী।
এই ভেগানরা কিন্তু ইন্ডিয়ার ভেজিটেরিয়ানদের মত না, ইন্ডিয়ানরা দুগ্ধজাত জিনিস খায়, ভেগানরা না।
ভেগানরা কেউ প্রাণীজ কোনোকিছু তো খায়ই না, উলটো যারা খায় তাদের সাথে ঝামেলা করে।
এমনও ঘটনা আছে, ভেগানদের একটা গ্রুপ এক মুরগীর ফার্মের সব মুরগি ছেড়ে দিয়েছিলো প্রাণীহ*ত্যা করা যাবে না বলে। পরে সবগুলো মুরগী শিয়াল ধরে খায়, মাঝখান থেকে কৃষক হারায় তার সর্বস্ব।
এরকম প্রচুর ঘটনা আছে।
আজকে কথা বলবো, নারীরা কেন এত ভেগান হয়ে যায়- এই ব্যাপারে।
এর মূল কারণ হলো, অ্যাবরশন (গর্ভপাত)।
শুনতে যেমনই লাগুক, ব্যপারটা সত্যি।
প্রথমে আমারও খটকা লেগেছিল। পরবর্তিতে একটা ইন্টারেস্টিং ব্যপার সামনে আসায় পুরো হিসেবটা মিলে যায়। সেটাই বলছি।
ইউটিউবে 'দ্যাট ভেগান টিচার' নামে একটা চ্যানেল পাবেন। কেডি কারেন নামের এই হ্যংলা মহিলা সবচেয়ে হার্ডকোর ভেগানদের একজন। গর্ডন রামসে, জিমি (মিঃ বিস্ট) সহ খুব অল্প সেলেব্রেটিই আছে যে এই মহিলার হাত থেকে রেহাই পেয়েছে। বিন্দুমাত্র অ্যাটেনশন পাওয়ার সুযোগ থাকলেই সে ওই টপিকে ভিডিও বানায় আর ভেগান আইডিওলজি প্রচার করে।
এই মহিলা কিন্তু প্রথমে মোটেও ভেগান ছিলো না, একদম স্বাভাবিক একজন নারী ছিলো। কয়েক বছর আগে সে একটা অ্যাবরশন করায়। এরপর এক মারাত্মক অপরাধবোধে ভুগতে শুরু করে। একপর্যায়ে ডিপ্রেশনে চলে যায়। নিজের সন্তানকে নিজহাতে খু*ন করার মারাত্মক অপরাধবোধ থেকে সে যেকোনো প্রাণী হ*ত্যাকেই পাপ মনে করতে শুরু করে। এভাবেই সে ভেগান হয়ে ওঠে।
এটা খুব কমন ভেগান ব্যাকস্টোরি।
ফেমিনিস্টদের 'মাই বডি মাই চয়েস' স্লোগান নিশ্চয় শুনেছেন। এই স্লোগানের মূল দাবীই ছিল অ্যাবর্শনের স্বাধীনতা। একজন নারী তার শরীর নিয়ে কী করবে কেবল সে-ই ঠিক করবে - এই ছিল তাদের যুক্তি। অ্যাবর্শন ব্যান করার কথা বলায় ট্রাম্পকে বহুবার রীতিমত ধুয়ে দেওয়া হয়েছে। আমেরিকাতে প্রায় দেড় হাজারের উপর অ্যাবর্শন ক্লিনিক আছে। গত দশ বছরে আমেরিকাতে অ্যাবর্শনের মাধ্যমে খু*ন করা হয়েছে প্রায় ১০ লাখ শিশুকে! বছরে এক লাখ!!
অ্যাবর্শন নিয়ে গতবছর থেকে প্রচুর হাউমাউ দেখা গেছে নারীবাদি শিবির থেকে। কারণ বিখ্যাত Roe VS Wade মামলায় সুপ্রিম কোর্ট রায়ে আমেরিকার স্টেটগুলোকে অ্যাবর্শন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই টেক্সাস, আলাবামার মত রিপাবলিকান রাজ্যগুলোতে অ্যাবর্শন নিষিদ্ধ করা হয়। এতেই যেন আগুন লাগে ফেমিনিস্ট পাড়ায়। রাতারাতি হাজার হাজার ফেমিনিস্ট বিক্ষোভ করতে শুরু করে নরহ*ত্যার অধিকারের দাবীতে। আপনারা টুইটারে Roe V Wade Protest - লিখে সার্চ দিলে এ সংক্রান্ত প্রচুর ভিডিও পাবেন।
এরপর যে কেউ কেক কেটে অ্যাবর্শন উদযাপন করে তো কোনো কোম্পানি অ্যাবর্শনের খরচ দিয়ে দেয়। ভ্রুণহ*ত্যা নিয়ে অনেক জঘন্য বক্তব্য, আর্টওয়ার্ক আসতে থাকে। এরকম জানোয়ারেরও দেখা পাওয়া যায়, যে ২১টা অ্যাবর্শন করেছে। মোটকথা, মাই বডি মাই চয়েসের অস্তিত্বের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায় এই অ্যাবর্শন।
মিছিল মিটিং করে ফেমিনিজম তো এগিয়ে দেওয়া গেলো। কিন্তু স্রষ্টার দেওয়া মাতৃত্ব কি গা থেকে ঝেড়ে ফেলা যায়? সাইকোলজি অনুযায়ি, একজন মা প্রতি চার মিনিটে একবার তার সন্তানের কথা মনে করে। সন্তানের মুখ দেখা, আলিঙ্গন এসবের চাহিদা গর্ভাবস্থা থেকেই শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ভেবে দেখুন, যেই সন্তানকে সে দিনের চারভাগের এক ভাগ সময় ধরে মিস করছে, তাকে তো মৃত্যুর আগে কোনোদিন দেখতেই পাবে না, আবার সেই সন্তানের খু*নি সে নিজেই! ডিপ্রেশনের জন্য আর কী লাগবে? SIRA এর একটা রিপোর্ট অনুযায়ী, অ্যাবর্শনের পর ৬৫% নারী ডিপ্রেশনের শিকার হন।
অ্যাবর্শন করা নারীদের অপরাধবোধের স্বীকারোক্তি নিয়ে একটা সাইট আছে, 'অ্যাবর্শন টেস্টিমোনিয়ালস' নামে। ওখানে এক নারী বলেন, এমন কোনো রাত নেই যে সে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমোতে যায় না।
ঘুমিয়েও শান্তি নেই। একই সংস্থার আরেক রিপোর্টে জানা যায়, অন্ততঃ ৪২% নারী তার নিজ হাতে খু*ন করা সন্তানকে স্বপ্নে দেখে থাকেন।
অনেকে হাসপাতালে যায়, যদি বাচ্চাটার অবশিষ্ট কিছু পাওয়া যায়। কেউ ধার্মিক হয়ে যায়। হাসপাতালের সামনের রাস্তাটায় দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করে, নিজের বাচ্চাটা তো এখানেই কোথাও মারা গেছে। গত জুনে এরকম ইংল্যান্ডে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছিল, কিন্তু পুলিশ সে মহিলাকেই গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
ফেমিনিজম নামক ধর্মের নোংরা-জঘন্য রূপটা বের হয়ে পড়ছিলো যে! তাই তাকে ধামাচাপা দিতে হলো।
আবার কেউ হয়ে যায় ভেগান। নরহ*ত্যাকারী ফেমিনিস্টগুলো আজীবন প্রাণীহ*ত্যার বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়ে কাটায়।
____________
✍ আহমাদ খান

Post a Comment

0 Comments