"নারী, পণ্য ও লোনের গল্প"

নারী, পণ্য ও লোনের গল্প
~~~~~~~~~~~
২০১২ সালের ঘটনা। ঢাকা থেকে দুজন কর্পোরেট কর্মকর্তা এক বিভাগীয় শহরে এলেন অফিস ট্যূরে। ডিনারের বিল কত এলো জানেন? ২২,০০০ টাকা।
আচ্ছা আপনি শেষ কবে বাইশ হাজার টাকার ডিনার খেয়েছেন?
হায়ার কর্পোরেট লেভেলে ভোগ্যপণ্যের যে কোয়ালিটি, ছাপোষা মিডল ক্লাস তা স্বপ্নেও ভাবতে পারবে না।
দেশে তো আম কম উৎপন্ন হয় না। কিন্তু মিডল ক্লাস বাচ্চাকে খাওয়ায় মিষ্টি কুমড়ার রস আর কাপড়ের রং দিয়ে বানানো 'জুস' - যা গরুরও খাওয়ার উপযোগী না।
তাহলে অর্গানিক জিনিসগুলো পাচ্ছে কারা? কর্পোরেট লোকজন।
***********
আচ্ছা কখনো কি ভেবে দেখেছেন, দেশের বড় বড় কোম্পানীগুলো খোদ ফেমিনিস্টদের চেয়ে বড় ফেমিনিস্ট জিনিসপত্র প্রচার করে কেন?
একটা হাদীস দেখাই, এটা দিয়ে একশোর বেশি জিনিস একবারে বুঝে যাবেন।
দুনিয়া উপভোগের উপকরণ (ভোগ্যপণ্য) এবং দুনিয়ার উত্তম উপভোগ্য উপকরণ পুণ্যবতী নারী।
সুত্রঃ https://cutt.ly/f8JTfVy
হাদীসে নারীকে উপভোগের জিনিস বলা হয়েছে।
এবার দেখুন, কর্পোরেট বাবুরা দুনিয়ার সমস্ত কনজ্যুমার পণ্যগুলোর বেস্ট জিনিসগুলো পায়। এখন নারী হলো সবচে বড় উপভোগের জিনিস, এটা তারা মিডল/ওয়ার্কিং ক্লাসের জন্য ছেড়ে দেবে কেন?
সুন্দরী নারী, সে যে কারো ঘরেই থাকতে পারে। এখন বাংলাদেশের মিডল/ওয়ার্কিং ক্লাসের ঘরে থাকা 'সুন্দরী নারী'রা ঢাকার কর্পোরেট বাবুদের জন্য সহজলোভ্য না, ধর্মীয় ও সামাজিক কারণে। তাই সামাজিক আর ধর্মীয় ট্রাডিশনগুলোর উপর তারা লাগাতার আঘাত করতেই থাকে। এবং এর কোনোটাই বিচ্ছিন্ন না।
ঢাকার একটা হর্নি ডিএমডি earki-র মত ১০০ পেজ পালতে পারে।
**********************
এর সবচে কার্যকর উদাহরণ হলো এনজিও কর্মকর্তারা।
গ্রামে যারা থাকেন তারা এদের ব্যপারে খুব ভালভাবে জানবেন। কিস্তি দিতে পারবা না? তো মেয়েটা দাও কিছুদিনের জন্য। অভাবে আটকে যাওয়া কত নিরুপায় মানুষ এই কাজ করে।
এনজিওর এমন কোনো বড়কর্তা আছে যে, হাইস্কুলের একটা মেয়েকে তাঁর কাছে শুতে দেয়া হবে আর সে ৫/১০টা কিস্তি মাফ করে দেবে না।
বহু এনজিও কর্মকর্তা শহুরে আয়েশ ছেড়ে গ্রামে যেতে চায় কেবলই এই এক কারণে।
*************
অ্যান্ড্রু টেইট বলেছেন, আধুনিক কর্পোরেট দুনিয়ার মুদ্রা হলো নারী। যার কাছে যত ভালো 'কোয়ালিটির' নারী আছে সে তত বেশী সুবিধা আদায় করে নিতে পারবে।
ধরুন, কর্পোরেট জগতে আপনার একটা ডিল খুব দরকার, কোম্পানি বাচাতে হবে। এখন ক্লায়েন্ট একজন মাল্টিমিলিয়নিয়ার, কিংবা বিলিয়নিয়ার। তাঁকে কত টাকা অফার করতে পারবেন আপনি? অথচ ১০ হাজার ডলারে দুজন লাতিনা হায়ার করে দিব্যি এই ডিল আদায় করে নিতে পারবেন।
যা মিলিয়ন ডলারে হয়না একটা *জবে তা উদ্ধার করা সম্ভব।
বাংলাদেশের একটা ঘটনা বলি। শোনা ঘটনা, হুবহু নাও মিলতে পারে।
একজন ঠিকাদার, বেশ চাপে পড়ে গেছেন, পাওনাদাররা জ্বালাচ্ছে। একটা লোণ পেলে সব ঠিক হত। কোনোভাবেই হচ্ছে না।
উপায় না পেয়ে গেলেন ঢাকাতে এক ব্যাংকের এমডির কাছে। সব শুনে এমডি বললেন, দেখুন, এত টাকা আয় করেছি, আমার টাকার খুব একটা দরকার নেই। বরং আপনার গ্রাম থেকে একটা ভার্জিন মেয়ে এনে দিন, লোণ অ্যাপ্রোভ করে দিচ্ছি।
নিরুপায় সেই ঠিকাদার সত্যিই এই জঘন্য কাজটা করেছিলেন।
************************
আমেরিকাতে একটা প্যাটার্ন ফলো করা হয়েছিল। নারীদের ব্যাপকভাবে কর্পোরেট সেক্টরে আসতে উৎসাহ দেওয়া হলো। আর বাইরে আসলো তো কর্পোরেট খাবারে পরিণত হলো।
কিন্তু এখানে কিছু সমস্যা ছিলো। কোন সুস্থ মাথার তরুণ চাইবে যে তাঁর সন্তান এক ব্যাভিচারিনীর গর্ভে জন্ম নিক? তাই নতুন করে ক্যাম্পেইন শুরু হল, মেয়েদের অতীত ম্যাটার করে না, ভার্জিনিটির কোনো দাম নেই। তাঁর সাথে সিঙ্গেল মাদার। নরমালি কেউ অন্য পুরুষের সন্তান পালতে চায় না। কিন্তু এরকম হলে তো চলবে না। তাই ৯০ দশক থেকে এখন পর্যন্ত অধিকাংশ হলিউডি সিনেমার নায়িকা একজন সিঙ্গেল মাদার। আবার নায়ক তা মেনেও নিচ্ছে। এভাবে সিংগেল মাদার গ্লোরিফাই করা হলো।
******
বাংলাদেশেও একই প্যাটার্ন। বাংলাদেশে শালীনতা যা আছে তাঁর পুরোটাই ধর্মের অবদান। কিন্তু ধর্ম নেই রাষ্ট্রে, সামাজিকভাবে যেটুকু টিকে ছিল, তাও দ্রুত শেষ হচ্ছে, পার্কগুলো দেখুন।
এখন আল্লাহ না করুন, ব্যাভিচারের নর্মালাইজেশন যদি হয়েই যায়, তাহলে কমিটমেন্ট শেষ হবে আর সব বেনিফিট দিয়ে জাজ করা হবে।
উদাহরণস্বরুপ, তখন ন্যাশনালে পড়া টিউশনি করা একটা বয়ফ্রেন্ড কী অফার করতে পারবে? একটা ফাইন ডাইনিংয়ে খাওয়াতে পারবে? আইফোন দিতে পারবে? কিন্তু ওই কর্পোরেট বড়বাবু পারবে এই টিনেজ মেয়েটার স্বপ্নের লাইফস্টাইল দিতে, লাখ টাকার ফ্লাটে রাখতে পারবে (সায়েম সোবহান ফ্যাক্ট)।
ফলে সমাজের সর্বস্তরের নারীরা ছুটবে ওই কর্পোরেট বাবুদের ভোগ্যপণ্য হতে, বেটার লাইফস্টাইলের আশায়।
আর মিডল/ওয়ার্কিং ক্লাস যুবকদের জন্য পড়ে থাকবে এঁটোকাঁটা, মানে ব্যাভিচারি বাছুরসহ সিঙ্গেল মাদার, যাকে নাকি আবার স্ত্রীর মর্যাদাও দিতে হবে।
বাংলাদেশেও এটা অনেক এগিয়ে গেছে। আমাদের তরুণদের একটা বড় অংশ ধরেই নিয়েছে ভার্জিন বউ পাওয়া যাবে না।
******
ওয়েল, এখন আপনি কি করতে পারেন? আসলে আপনার অপশন খুবই কম। গ্রামীনফোন ১০ লাখ টাকা ঢেলে আপনার মেয়ের স্কুলে ক্যাম্পেইন করবে, বিয়ের আগে সেক্স অন্যায় নয়, আপনি কত টাকা ঢালতে পারবেন? বরং আপনি যা করতে পারেন, ওই স্কুলে আপনার মেয়েকে না পাঠাতে পারেন।
এইতো।
_________________
✍ Ahmad Khan (Junior Admin)

Post a Comment

0 Comments