ভার্সিটি থাকাকালীন সময়ের কথা

 


ভীষণ অসহায় করে দিয়ে রাহাতকে তার স্ত্রী জানিয়ে দিলো, পাগলের ভাত সে খাবে না। মাস কয়েক পরে পাঠিয়ে দিলো ডিভোর্স লেটারও। মনের কোণে কোথাও যেন প্রবল ঝড় বইতে শুরু করলো। এই ঝড় থামবার নয়। দিনের পর দিন। রাতের পর রাত। ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাচ্ছে ভেতরটা। প্রিয়তমার এভাবে ছেড়ে চলে যাওয়া ভেতর থেকে পুরোপুরি শেষ করে দিচ্ছিলো রাহাতকে।
ভার্সিটি থাকাকালীন সময়ের কথা। ল্যাবে ফেইল করে সেমিস্টার ড্রপ দিতে হয় তাকে। ডিপ্রেশন শব্দটার সাথে আমরা সবাই পরিচিত। জুনিয়রদের সাথে ক্লাস করা, এক্সট্রা টাকার প্রেশার- এসব রাহাতকে শান্তি দিচ্ছিলো না। চোখের ঘুম হারাম হলো। সাইক্রিয়াটিস্ট দেখিয়ে জানা গেলো, 'বাইপোলার এফেক্টিভ ডিস-অর্ডার।'
ডাক্তার জানিয়ে দিলো, দুই বছর পড়াশুনা থেকে দূরে থাকতে হবে।
বিয়ের আগে স্ত্রী'কে এই ব্যাপারে জানানো হয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু, সে বিয়ে আর টিকলো না।
জীবনের এই পর্যায়ে এসে রাহাত ভেতর থেকে পুরোপুরি একা হয়ে যায়। বন্ধুরা যেখানে চাকরি-বাকরি-ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত সেখানে সে এখনো গ্র্যাজুয়েশনই কমপ্লিট করতে পারেনি। তার ওপর প্রিয়তমার সাথে বিচ্ছেদ। জীবন কি তবে এখানেই শেষ!?
শেষ হয়ে যেতে পারতো যদি কোনো কাপুরুষ নিজের জীবন থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতো। কিন্তু, রাহাত ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছে। ঝংকার মাহবুবের কোনো এক ইউটিউব ভিডিওর মাধ্যমে সে জানতে পারে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট কোর্সের ৬ষ্ঠ ব্যাচের কথা। এরপর, শুরু হয় প্রোগ্রামিং হিরো'র সাথে রাহাতের 'নিজের ক্যারিয়ার কোড' করার জার্নি।
প্রোগ্রামিং হিরো'র সাথে নিজের ক্যারিয়ার কোড করার জার্নি মানেই অসম্ভব হার্ডওয়ার্ক, ডেডিকেশন, কনসিসটেন্সির গল্প। সময় মতন মডিউল শেষ করার গল্প। কষ্ট করে 'সহজ-সরল-সিম্পল' এসাইনমেন্ট জমা দেওয়ার গল্প।
আর, এই গল্প পূর্ণতা পেয়েছে ঠিক সেই মূহুর্তে যখন রাহাত আমেরিকান (USA) বেইজড কোম্পানি DevRiser থেকে রেস্পন্স পেয়েছে, 'You're hired. Glad to have you onboard'.
প্রত্যেকের লাইফই ভীষণরকম গল্পময়। কেউ গল্পটাকে রাঙানোর চেষ্টা করে। কেউ হাল ছেড়ে দেয়। তবে কি, তোমার হবে না,সবাইকে বলার মতন একটা গল্প? তুমি কি হারিয়ে যাবে?
----
✒️ মেহেদী হাসান সাগর

Post a Comment

0 Comments